সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ইউপি ভবন দখল

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভবন ও জমি দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির নাম মো. হানিফউল্লাহ (৫০)। তিনি পটুয়াখালী কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ওই ইউপি ভবন ও জমি দখল করে নিয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ। স্থানীয় লোকজন, ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬১ সালের ৮ আগস্ট স্থানীয় উপেন্দ্র লাল ওঝার কাছ থেকে ৪৫ শতাংশ জমি আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের নামে দলিল করা হয়।
এরপর থেকে ওই জমিতে নির্মাণ করা হয় একটি আধা পাকা টিনশেড ঘর। ওই ঘরটিতেই চলে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। ২০১৫ সালের শেষের দিকে সরকারিভাবে একই ইউনিয়নের মিলঘর এলাকায় আরও একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে নতুন ভবনে চলে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। আর সেই সুযোগে ২০১৬ সালের শুরুর দিকে পুরোনো ইউপি ভবনসহ ৪৫ শতাংশ জমি দখল করে নেন হানিফউল্লাহ নামের প্রভাবশালী স্থানীয় ওই ব্যক্তি। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির সামনে পটুয়াখালী কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড রয়েছে। তবে ভবনটি তালাবদ্ধ। ভেতরে কিছু চেয়ার ও বেঞ্চ দেখা যায়। ওই সময়ে আশপাশে কোনো শিক্ষার্থী কিংবা কোনো শিক্ষক পাওয়া যায়নি। ওই ভবনের দক্ষিণ পাশে আরেকটি টিনশেড ঘরের একটি কক্ষে বসে কম্পিউটারে কাজ করছিলেন দুই ব্যক্তি। তাঁদের একজন ওই প্রতিষ্ঠানের সাহায্যকারী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমার নাম মো. মাসুম (৩০)। সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে এ জন্য এখানে কেউ নেই।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের নাম মো. হানিফউল্লাহ। খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন হানিফউল্লাহ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কোনো জমি নেই। তবে পরিষদের পুরোনো একটি আধা পাকা টিনশেড ঘর আছে। তা আমি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাহেবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে মেরামত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালাচ্ছি।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
‘আমি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং দেখাশোনা করি।’ আবদুস সালাম হাওলাদার নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রায় এক বছর আগে তিনি (হানিফউল্লাহ) ইউপি ভবনসংলগ্ন গ্রাম্য আদালতের সাইনবোর্ডটি মুছে সেখানে পটুয়াখালী কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের নাম লিখে দেন এবং জমি দখল করে নেন। আদাবাড়িয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কৌশলে হানিফউল্লাহ ওই জমি দখল করে নিয়েছেন।’ তিনি ওই জমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে আদাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সামসুল হক ফকির বলেন, ‘কাউকে ইউপি ভবন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ভবনটি দখলের বিষয়ে আমি শুনেছি। উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

No comments

Powered by Blogger.