খুনের সাড়ে আট মাস পর মাহমুদার সিম ভোলা থেকে উদ্ধার

হত্যাকাণ্ডের সাড়ে আট মাস পর মাহমুদা খানমের মুঠোফোনের সিমটি উদ্ধার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ভোলার লালমোহন এলাকার এক রিকশাচালকের কাছ থেকে সিমটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মাহমুদার মুঠোফোন সেটটি পাওয়া যায়নি। গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদাকে। সেদিন মুঠোফোন সেটটি তাঁর সঙ্গে ছিল। কিন্তু লাশ উদ্ধারের সময় মুঠোফোনটি খুঁজে পায়নি পুলিশ। গত ২৬ জানুয়ারি মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফ ও বাবা মোশাররফ হোসেনকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ডেকে নিয়ে কথা বলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। সেদিন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মুঠোফোন সেটটি উদ্ধার করতে অনুরোধ করেন তাঁরা। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে শাহেদা মোশাররফ সাংবাদিকদের বলেন, সপ্তাহখানেক আগে মাহমুদার মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁদের বাসার একটি নম্বরে কল আসে। তখন বুঝতে পারেন মাহমুদার ফোনটি সচল রয়েছে। পরে ওই নম্বরে কল করলে এক অটোরিকশাচালক ফোন ধরেন। রাজধানীর হাতিরঝিলে তিনি সিমটি পেয়েছেন বলে তাঁদের জানান। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামান গতকাল বুধবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া এলাকায় রাস্তায় সিমটি কুড়িয়ে পান অটোরিকশাচালক আবদুল মান্নান। তাঁর বাড়ি ভোলার লালমোহনে। সিমটি তিনি নিজের মুঠোফোনে ব্যবহার করতে থাকেন। কিছুদিন আগে মান্নান চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে লালমোহন চলে যান। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আসামিরা কিংবা ঘটনার পর রাস্তা থেকে কেউ মুঠোফোনটি চুরি করে নিয়ে যেতে পারে। পরে হয়তো সিমটি রাস্তায় ফেলে দিয়ে মুঠোফোনটি কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। হাতিরঝিল এলাকা থেকে মান্নান সিমটি কুড়িয়ে পেয়েছেন, এ কথা মাহমুদার বাবাকে বললেও পুলিশকে কেন বাকলিয়ার কথা বলেছেন, তা জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘মান্নান ওনাদের এটা কেন বলেছে, জানি না। সে বাকলিয়ার কালামিয়া বাজার এলাকায় থাকত, এটা আমরা নিশ্চিত।’ মাহমুদা হত্যার মূল সন্দেহভাজন আসামি ‘নিখোঁজ’ কামরুল শিকদার ওরফে মুছা বাকলিয়ার রাজাখালী এলাকায় থাকতেন। তাঁকে ধরিয়ে দিতে পুলিশ পাঁচ লাখ পুরস্কার ঘোষণা করেছে। মাহমুদা হত্যায় অস্ত্র সরবরাহ করেন আরেক আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা (এখন কারাগারে)। ভোলার সহযোগী মনির হোসেনের কাছ থেকে মাহমুদা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি বাকলিয়ার রাজাখালী এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ভোলাও বাকলিয়া এলাকায় থাকতেন। মাহমুদা হত্যার তিন সপ্তাহ পর গত বছরের ২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ‘বাবুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হলো।’

No comments

Powered by Blogger.