দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ অধিকার রক্ষায় মিত্রদের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র

নয়াদিল্লিতে জন কেরি
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর সেখানে নৌ চলাচলের স্বাধীনতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। দুই দিনের ভারত সফরের শেষ দিনে গতকাল বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে এ কথা বলেন জন কেরি। কেরি তাঁর বক্তৃতায় সাগর নিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সাম্প্রতিক রায় মেনে নেওয়ার জন্য চীন ও ফিলিপাইনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের কোনো সামরিক সমাধান নেই।’ কেরি বলেন, আন্তর্জাতিক নৌপথ হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই। তবে তাঁর দেশ চলাচলের অধিকারের বিষয়ে পক্ষে অবস্থান নেবে। নৌ চলাচল এবং আইনের শাসনের উল্লেখ করে কেরি বলেন, ‘আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। তা হলো, আমরা আমাদের অধিকার সমুন্নত রাখব। এর পাশাপাশি আমাদের বন্ধু দেশগুলোর অধিকারের বিষয়েও তাদের পাশে থাকব।’ কেরি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশগুলো নৌ চলাচলের স্বাধীনতা, সমুদ্র-সংক্রান্ত প্রথা ও রীতিনীতির বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল। চীন দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো অংশকেই নিজের বলে দাবি করে। তবে পাল্টা দাবি আছে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানের। গত কয়েক মাসে চীন সাগরের ছোট ছোট দ্বীপে একটি ছোট বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু স্থাপনা তৈরি করেছে। তবে গত মাসে ফিলিপাইনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ অনুমোদিত একটি ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়,
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের দাবির কোনো আইনি ভিত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, দক্ষিণ চীনের দাবি করা দ্বীপগুলোতে তারা নৌ নজরদারি অব্যাহত রাখবে। নৌ চলাচলের স্বাধীনতার বিষয়টি সমুন্নত রাখতেই এ তৎপরতা অব্যাহত রাখবে তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ তৎপরতার জন্য বড্ড নাখোশ চীন। জন কেরি বলেন, ‘আমরা বারবার চীন ও ফিলিপাইনকে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আদালতের রায় মেনে চলার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’ আগামী রোববার থেকে চীনে জি-২০ নেতাদের বৈঠক শুরু হচ্ছে। ওই বৈঠকে সমুদ্রসীমা নিয়ে তপ্ত আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হয়। এর আগেই কেরি দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে এ মন্তব্যগুলো করলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, নিজ ভূখণ্ডে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্য দেশকেও শামিল করা উচিত পাকিস্তানের। নিউইয়র্কে আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠেয় আলোচনার কারণে নিজেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ ভাবার কোনো কারণ নেই ইসলামাবাদের। এদিকে গত মঙ্গলবার ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় কৌশলগত ও বাণিজ্য সংলাপে (এস অ্যান্ড সিডি) ‘পাকিস্তান থেকে সৃষ্ট’ সন্ত্রাসবাদ এবং অন্যান্য কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও বাণিজ্যিক স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানো এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে দুই দেশের আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

No comments

Powered by Blogger.