সুরাইয়ার করুণ মৃত্যু

বখাটে যুবকের হাতে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিসার মৃত্যু আবারও আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এ দেশে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় সমস্যা রয়েছে। বখাটে ওই যুবক রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় একটি পদচারী-সেতুতে প্রকাশ্য দিবালোকে অনেক লোকের সামনে রিসাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। মাস ছয়েক আগে স্কুলের ড্রেস বানাতে রিসা মায়ের সঙ্গে গিয়েছিল একটি টেইলার্সে। সেই টেইলার্সের কর্মচারী ওই বখাটে যুবক ফোন নম্বর পেয়ে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে রিসাকে, পিছু নেয় তার। সেই মুঠোফোন নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে তাতেই হয়তো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ওই যুবক। এরই জেরে এই হত্যাকাণ্ড। এটা বিস্ময়কর যে খুন বিষয়টি এখন কতটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে! তা না হলে এ ঘটনার জের ধরে একটি খুনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে! কাকরাইলের মতো জনবহুল একটি এলাকায় এভাবে একটি মেয়েকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চিত্রকেই তুলে ধরে।
কেউ মেয়েটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। ওই পদচারী-সেতুর সামনে ও পেছনের মোড়ে পুলিশ ছিল, তারা কেন কিছু করতে পারল না, সেটাও এক বড় প্রশ্ন। আমাদের দেশে বখাটেদের হামলায় প্রাণহানির ঘটনা নতুন নয়। বখাটেদের অত্যাচার সইতে না পেরে অনেক মেয়ে আত্মহত্যাও করেছে। এসবের কি কোনো বিহিত নেই? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়টি এখানে সবচেয়ে বেশি। সামাজিক প্রতিরোধ ও সচেতনতার বিষয়টিও রয়েছে। বখাটেদের কারণে আর কোনো মেয়ের করুণ মৃত্যু আমরা দেখতে চাই না। আর কোনো বাবার হাহাকার, মায়ের আহাজারি আমরা শুনতে চাই না। এই বয়সের একটি মেয়েকে হারিয়ে মা-বাবা কোন পরিস্থিতির মধ্যে সময় পার করছেন, তা আমাদের ধারণার বাইরে। রিসার পরিবারের প্রতি রইল আমাদের শোক ও সমবেদনা। রিসার খুনি দ্রুত ধরা পড়ুক, যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত হোক।

No comments

Powered by Blogger.