এখনো যৌতুকের জন্য নির্যাতন!

বিয়ে হয়েছে ভালোবাসায়, কিন্তু প্রতিদান হিসেবে পেয়েছেন বর্বর নির্যাতন। রাজশাহীর রিফাহ তাসফিয়া স্বামীর যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় ভয়ানক নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন হাসপাতালে। নির্যাতক স্বামীও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। যৌতুকের অভিশাপ কেবল নিরীহ মেয়েটিকেই অসহনীয় পরিস্থিতিতে ফেলেনি, পরিবারকেও এর চাপ বইতে হবে। আর সুষ্ঠু বিচার হলে যৌতুক চাওয়া ও নারী নির্যাতনের অপরাধে পুরুষটির কঠিন শাস্তি হওয়ার কথা। এরপরও কি যৌতুক নামক অমানবিক চর্চার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না সব মানুষ?
এখনো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যৌতুকের কারণে বহু পরিবারে অশান্তি, আর্থিক দুর্দশা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। এই একবিংশ শতাব্দীতেও নারীকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এমনকি স্বামীর কাছে অপমানিত ও নির্যাতিত হতে হয়! গতকাল বুধবারের প্রথম আলোয় রাজশাহীর তরুণী বধূ রিফাহ তাসফিয়ার আহত অবস্থার ছবি প্রকাশিত হয়েছে। চাহিদামাফিক যৌতুক না পাওয়ায় তাঁর তরুণ স্বামী, যিনি কি না এখনো কলেজের ছাত্র, তাসফিয়াকে জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। নির্যাতনে মেয়েটির দুই হাত, পা, মাথা ও বুকের হাড় ভেঙে গেছে। সামিউল অসুস্থ মস্তিষ্কে নিজের স্ত্রী, নিজের সন্তানের মায়ের ওপর এই বর্বরতা চালিয়েছেন—এমনটা বলার সুযোগ নেই। কারণ,
এই নির্যাতন চলে আসছিল দিনের পর দিন। পরিবারের সমর্থন ছাড়া সামিউলের পক্ষে এভাবে বারবার নির্যাতন চালানো কঠিন ছিল। যৌতুক নামক কুৎসিত প্রথাটি যে কোথাও কোথাও সামাজিকভাবে পরিবারের সম্মতিতেই টিকে আছে, রাজশাহীর ঘটনা তার সাক্ষ্য দেয়। এ ধরনের ঘটনা কেবল লজ্জায় আমাদের মাথাই হেঁট করে দেয় না, মানুষের ওপর বিশ্বাসকেও নাড়িয়ে দেয়। সামিউলকে তাসফিয়ার আত্মীয়দের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন দ্রুত তদন্ত করে বিচারকাজ শুরু করা দরকার। যৌতুক ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় আপসহীন বিচারই পারে এর অবসান ঘটাতে।

No comments

Powered by Blogger.