প্রার্থীদের নিজের বাড়ি নেই অন্যের টাকায় করছেন নির্বাচন by ইমাদ উদ দীন

আর্থিকভাবে তারা সবাই অসচ্ছল। তাদের নিজস্ব কোন বাড়ি নেই। যৌথ বাড়িতেই করছেন বসবাস। তাদের আর্থিকভাবে তেমন সঙ্গতি না থাকায় অন্যের দানের টাকায় তারা করছেন নির্বাচন। প্রবাসী ও নিকট আত্মীয়দের আথির্ক সহযোগিতায় তারা অংশ নিয়েছেন নির্বাচনে। আর্থিকভাবে সচ্ছল নয় ছয় প্রার্থীর কেউ। এমন তথ্য হলফনামায় দিয়েছেন  মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার নির্বাচনে অংশ নেয়া ছয় মেয়র প্রার্থী। হলফনামায় তথ্যানুযায়ী, আওয়ামীলীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীকের) প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লিখেছেন তিনি এইচএসসি পাস করেছেন। আর্থিক আয়ের উৎস কলামে লিখেছেন তিনি একটি করাতকলের মালিক। এছাড়া ৭০ শতক কৃষিজমি থেকে বছরে আয় ২০ হাজার টাকা। আর ব্যবসা থেকে আয় হয় দুই লাখ টাকা। যৌথ মালিকানায় তার একটি বাড়ি আছে। ব্যাংকে জমা আছে ৭০ হাজার ৬২৭ টাকা। ব্যবসার ২০ হাজার টাকা ও চাকরিজীবী ভাইয়ের কাছ থেকে  স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে পাওয়া ৮০ হাজার টাকা দিয়েই  তিনি তার নির্বাচনী ব্যয় করবেন। বিএনপি মনোনীত (ধানের শীষ, প্রতীকের) প্রার্থী  আনোয়ারুল ইসলাম তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি বিএ পাস। আয়ের উৎস হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একজন ঠিকাদার। সাড়ে নয় শতকের কৃষিজমি থাকলেও এ খাত  থেকে তার কোন আয় নেই। যৌথ মালিকানায় তার একটি বাড়ি আছে। বড়লেখার একটি ব্যাংকে তার ১ লাখ ৪ হাজার ৯০৭ টাকা ঋণ আছে। ফ্রান্স প্রবাসী ভাতিজার কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ৯৫ হাজার টাকা ও পাশের জুড়ী উপজেলার বিএনপি’র এক নেতার কাছ থেকে দানের প্রাপ্ত ২০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র (নারিকেল গাছ প্রতীকের) প্রার্থী আবদুল নূর তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লিখেছেন তিনি সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। ১৫ একরের যৌথ মালিকানার কৃষিজমি থেকে তার বার্ষিক আয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ব্যাংকে নিজের নামে আট লাখ টাকা জমা আছে। তিনি যৌথ মালিকানার বাড়িতে থাকেন। ব্যবসায়ী ভাইয়ের কাছ থেকে দান হিসেবে পাওয়া ৭০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।বিএনপি’র বিদ্রোহী স্বতন্ত্র (জগ প্রতীকের) প্রার্থী মতিউর রহমানের (ইরাজ আলী) শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস বলে উল্লেখ করেছেন তিনি । তার আয়ের উৎস হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন সাড়ে ১০ শতকের কৃষিজমি থেকে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তার নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাতিজার দান করা ৮০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনী খাতে ব্যয় করবেন। জাতীয় পার্টির মনোনীত (লাঙ্গল প্রতীকের) প্রার্থী মীর মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লিখেছেন তিনি  বিএ পাস। নিজস্ব কোন বাড়ি না থাকলেও যৌথ মালিকানায় তার একটি বাড়ি রয়েছে। কাতার প্রবাসী তার এক বন্ধুর কাছ থেকে দান পাওয়া এক লাখ টাকায় তিনি নির্বাচন করছেন। জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত (মোবাইল প্রতীকের) স্বতন্ত্র প্রার্থী খিজির আহমদ শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লিখেছেন আলিম (এইচএসি) পাস। আয়ের উৎস হিসেবে তিনি জানিয়েছেন তিনি  পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় হয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নিজের নামে ২ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস ও আসবাবসামগ্রী ও নগদ আছে ৪৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৩ হাজার ৯৬৩ টাকা। ব্যবসার ৩০ হাজার টাকা ও তার ভাইয়ের কাছ  থেকে ধার করা ৭০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন।

No comments

Powered by Blogger.