প্রিজনভ্যানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আনা-নেয়া মনিটরিং করবেন ঊর্ধ্বতনরা

প্রিজনভ্যানে করে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার বন্দিদের সচিত্র দৃশ্য দেখবেন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা। এজন্য প্রিজনভ্যানে ওয়েব বেইজড ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে। এর ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি এ বিষয়ে একই সুপারিশ দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত এবং কারা ফটকের সামনে বিদ্যমান স্থাপিত সিসি টিভি ক্যামেরা সচল করা, পুনঃস্থাপন ও নতুনভাবে স্থাপনের বিষয়ে সুপারিশ দিতে আট সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি অভিজ্ঞ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন পাঁচ কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত উপকমিটিকে নিয়ে সিসিটিভিগুলো পর্যবেক্ষণ করে। তারা পর্যবেক্ষণে বিজিবি কর্তৃক এর আগে স্থাপিত ৩২টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে নয়টি ক্যামেরা সচল পায়। বাকি চারটি ক্যামেরা অচল ও ১৯টি ক্যামেরা চুরি/খোয়া যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারে। এরপর কমিটি বিজিবি কর্তৃক নতুন আরও ১১টি পয়েন্টে ১১টি নতুন সিসি ক্যামেরা স্থাপনপূর্বক মোট ৪৩টি সিসি ক্যামেরা সম্পূর্ণ কার্যকর ও সচল অবস্থায় জেল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়। এরপর জেল কর্তৃপক্ষ উচ্চপর্যায়ের কমিটির আলোচনা ও সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার গেটের সামনে পিডব্লিউডি ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের গেটে দুটি, সিঁড়ির গোড়ায় একটি, আদালত কক্ষ থেকে বের হওয়ার পথে একটি এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট ও কারা অভ্যন্তরে ঢোকার মধ্যবর্তী স্থানে দুটিসহ মোট ছয়টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কমিটি দেখতে পায় ৪৯টি সিসি টিভি ক্যামেরা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ডিসপ্লে বোর্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের কমিটি তাদের সুপারিশে জানায়, বিজিবি কর্তৃক স্থাপিত ক্যামেরাগুলোসহ সব সিসি ক্যামেরা পরিচালনা ও সচল রাখার দায়িত্ব পালন করতে কারা অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া সমীচীন হবে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা মেইনটেন্যান্স খাতে প্রতি অর্থবছরে কারা অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সুপারিশে বলা হয়, প্রিজনভ্যানে ওয়েব বেইজড ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করলে পরীক্ষামূলকভাবে অন্তত দুটি প্রিজনভ্যানে কারিগরি সুবিধা স্থাপনের লক্ষ্যে মহাপুলিশ পরিদর্শকের দপ্তর থেকে ভালো মানের দুটি প্রিজনভ্যান নির্বাচন করতে হবে। একই সঙ্গে ওয়েব বেইজড ক্যামেরা স্থাপন-সংক্রান্ত বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে পাওয়া অফার লেটার ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন এক্সপার্টদের প্রস্তুতকৃত প্রতিটি প্রিজন ভ্যান সিস্টেম চালু করার জন্য যেসব প্রডাক্ট কেনা প্রয়োজন, এরূপ মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জরুরিভাবে এলটিএম পদ্ধতিতে আলোচ্য কারিগরি সুবিধা কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রিজনভ্যানে ওয়েব বেইজড ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তা পরিচালনার ডিসপ্লে বোর্ডটি বাংলাদেশ পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন নবাব আবদুল গণি রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ডিএমডি, ঢাকা কার্যালয়ে স্থাপন করা যেতে পারে। ওয়েব বেইজড ক্যামেরা স্থাপিত প্রিজনভ্যান পরিচালনার জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট খাতে প্রতি অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। ওয়েব বেইজড ক্যামেরা স্থাপিত প্রিজনভ্যানের গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শকের অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে কানেক্টিভিটি রাখা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চপর্যায়ের কমিটির এ সুপারিশের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সহসাই বাস্তবায়ন শুরু করবেন তারা।

No comments

Powered by Blogger.