সৌদি বাদশাহকে সরানোর পক্ষে বেশির ভাগ যুবরাজ

সালমান বিন আবদুল আজিজ
সৌদি আরবের এক যুবরাজ বলেছেন, ১২ জন যুবরাজের মধ্যে ৮ জনই বর্তমান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজকে সরানোর পক্ষে। যুক্তরাজ্যের ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই যুবরাজ বলেন, সালমানের জায়গায় তাঁরা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ বিন আবদুল আজিজকে আনতে চান। খবর ইনডিপেনডেন্টের। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবরাজ বলেন, উলামা ও ধর্মীয় নেতারা প্রিন্স আহমদকে পছন্দ করেন। তবে সবাই নয়। তবে ৭৫ শতাংশ তো হবেই। সৌদি রাজতন্ত্রে কোনো পরিবর্তনের জন্য ধর্মীয় নেতাদের মতামত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নানা বিষয়ে মতামত দেওয়ারও ক্ষমতা আছে তাঁদের। ক্ষমতার প্রশ্নে সৌদি রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। যুবরাজের কথার পর আরও পোক্ত হলো। আবদুল আজিজ আল সউদ ১৯৩২ সালে সৌদি আরবের বর্তমান রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬৪ সালে তাঁর বড় ছেলে সউদ বিন আবদুল আজিজকে পরিবারের বিদ্রোহে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হয়েছিল ভাই ফয়সলের হাতে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে মনে করেন আল সউদের নাতি ওই যুবরাজ।যুবরাজ বলেন, এখন বাদশাহ সালমানের কাছে দুটি পথ খোলা আছে। এক হতে পারে তিনি আল সউদের মতো দেশ ছেড়ে চলে যাবেন। আর এতে দেশে এবং দেশের বাইরেও তিনি সম্মান পাবেন। নতুবা প্রিন্স আহমদকে পূর্ণ ক্ষমতাসহ ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করা যেতে পারে। তখন তিনি তেল, অর্থনীতি, সমরাস্ত্র, অভ্যন্তরীণ, গোয়েন্দা বিভাগ—অর্থাৎ সবকিছুই দেখবেন। ভাই আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের মৃত্যুর পর এ বছরের শুরুতে সালমান বাদশাহ হন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজপরিবারের বিদ্রোহের গুঞ্জন শুরু হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি রাজপরিবারের নেতৃত্বের পরিবর্তন নিয়ে দুটো চিঠি বেশ আলোড়ন তোলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই যুবরাজই চিঠি দুটি লিখেছেন। ওই যুবরাজকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, শাসক হিসেবে সালমানের কিছু সিদ্ধান্তে তাঁর কাছের লোকেরাও অসন্তুষ্ট। ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে কাছের ৩০ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স নির্বাচন, তাঁকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বানানো, ইয়েমেন যুদ্ধের সীমাহীন ব্যয় এবং সম্প্রতি পবিত্র হজের সময় দুর্ঘটনা সালমানকে আরও অজনপ্রিয় করে তুলেছে। ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর মোহাম্মদ বিন সালমান ব্যাপক ক্ষমতা ও সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে জানান ওই যুবরাজ। তিনি বলেন, যেকোনো কাগজপত্র বা টেলিফোন তাঁর বাবার কাছে যাওয়ার আগে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্সের হাত হয়ে যায়। এখন যিনি ক্রাউন প্রিন্স, সেই মোহাম্মদ বিন নায়েফও অজনপ্রিয়।

No comments

Powered by Blogger.