‘মান যায় মন্ত্রীর, মামলা করে চেরাগ আলী’

‘মান যায় মন্ত্রীর, মামলা করে চেরাগ আলী’ উল্লেখ করে সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের মামলা অবিলম্বে তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেছেন, অবিলম্বে এই মামলাটি তুলে নেয়া উচিত। না হলে যতই দিন যাবে ততই এটি গন্ধ ছড়াবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু একাডেমি’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতি’বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, প্রবীর শিকদার থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়ে পুলিশের কোন সহায়তা পাননি, এরপর তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ায় একজন মন্ত্রীর নাকি মান গিয়েছে। মান যায় মন্ত্রীর আর মামলা করে চেরাগ আলী। চেরাগ আলী তুমি তো সরকারের লোক, তুমি কেন মামলা করতে যাবে। তিনি বলেন, তার (প্রবীর শিকদার) বিরুদ্ধে মামলা হলো ১১টায়। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো ৬টায়। এর মানে দাঁড়ায় শত্রুদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হলো। কিন্তু আমরা এটা আশা করিনি। প্রবীর শিকদারের মামলার বিষয়টির সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন  উচ্চশিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক। আর তার প্রতিপক্ষ হলেন পা হারানো সাংবাদিক প্রবীর শিকদার। যারা প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তারা অতি উৎসাহী। একজন প্রবীণ সাংবাদিককে তার নিজের সরকার চোখ বেঁধে নিয়ে যাবে! সে তো আমাদের জন্যই পা হারিয়েছে। সুরঞ্জিত সেন জোর দিয়ে বলেন, প্রবীর শিকদারকে দমানো যাবে না। একাত্তরে তিনি পরিবারের ১৪ জন লোক হারিয়েছেন। তাকে আটকানো যাবে না। আশা করি, বিষয়টির একটি গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি হবে। কারণ রাজনীতি, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের মধ্যে সংঘাত হতে পারে না। একটি অপরটির পরিপূরক। গণমাধ্যম না হলে জনগণের কাছে পৌঁছানো যাবে না। মামলাটি অবিলম্বে তুলে নেয়া প্রয়োজন। না হলে যতই দিন যাবে ততোই তা গন্ধ ছড়াবে। সরকারকে আরও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ক্ষমতার দম্ভ ও অহঙ্কার আসলে সেই ক্ষমতা পরিমার্জিত হয়। ক্ষমতা মানে চাটুকারিতা, দম্ভ, তোষামোদী নয়। ক্রসফায়ারে ছাত্রলীগের দুই নেতা নিহতের ঘটনায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংকটের সমাধান ক্রসফায়ার নয়। ছাত্রলীগকে সাবধান করতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শবান হিসেবে তৈরি করতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে আর ছাত্রলীগকে ক্রসফায়ারে মারবে- এটা কাম্য নয়। বঙ্গবন্ধু একাডেমির উপদেষ্টা নারায়ণ দেবনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা হারুন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইসকেন্দার মির্জা শামীম, আসাদুজ্জামান দুর্জয়, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.