ট্রানজিট পেতে ভারত অনেক দিন ধরে উৎসুক -অর্থমন্ত্রী by শওকত ওসমান রচি

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, ট্রানজিট পেতে ভারত অনেক দিন ধরে উৎসুক। চীন- মিয়ানমারও ট্রানজিট ব্যবহার করতে পারে। তিনি বলেন, তবে ট্রানজিট দেয়ার সামর্থ আমাদের নেই। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে বৈঠকে আমরা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ট্রানজিটে জন্য অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে বলেছি। ট্রানজিটের জন্য রেল খাত হবে সহজ বিনিয়োগ। ট্রানজিট সিলেট  দিয়েই যেতে হবে। সিলেটের রেললাইনকে ব্যাপক পরিবর্তন করতে হবে। 
নিউইয়র্কে সোমবার রাতে স্থানীয় একটি হোটেলে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা, ইনক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী একথা বলেন। 
তিনি বলেন, বিগত আওয়াম লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশ হবে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড। ট্রানজিট কান্ট্রি হিসেবে এটা সম্ভব হবে। অর্থমন্ত্রী জানান, ট্রানজিট হবে কি হবে না তা ৪০ বছরেও সিদ্ধান্ত হয়নি। 
নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্ল¬াইট আবারো চালুর জন্য প্রবাসীদের দাবি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিমানের বহরকে শক্তিশালী করছি। নতুন বিমান কেনার সিদ্ধান্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নেয়া হয়েছে, যা ২০২১ সাল পর্যন্ত বহাল রয়েছে। তারা এটা ভালো পরিকল্পনা নিয়েছিল। বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির দুর্বলতার কারণে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান চালু হচ্ছে না উল্লেখ করে আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, সিভিল এভিয়েশন বিমান বাহিনী পরিচালনা করে। তারা ব্যবসা বোঝে না। তাদের পরিবর্তন করা না হলে এ রুটে বিমান চলাচল শুরু হবে না। এ রুটে বিমান চালু কত দিনে হবে আমরা জানি না। এটা আমাদের দুর্বলতা। 
রান্নার কাজে গ্যাস সরবরাহ প্রসঙ্গে প্রবাসীদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রান্নার জন্য গ্যাসেরব ব্যবহার এ দেশ থেকে তুলে দিতে হবে। প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা চুলার জন্য নয়, ইন্ডাস্ট্রির জন্য গ্যাস দাবি করেন। চুলা জ্বালানো মানে গ্যাস ধ্বংস করা।  বালাদেশের রাজনীতিবিদদের সবার চিন্তা ‘আমার বাড়ির পাশে রাস্তা হবে’- উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকার মহাসড়ক আর না বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। সিলেটে অর্থেও প্রচুর অপচয় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাজীবাজার ব্রিজ সিলেটের একটি অভিশাপ। এটা শুধু সুদৃশ্য হিসেবেই থাকবে। এ ব্রিজের কাজ শুরুর আগে কোনো পরিকল্পনা নেই। ব্রিজটি কোনো উপকারে আসবে না। এ খাতে ১৫০ কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। 
প্রবাসীরা সিলেটে বিনিয়োগ করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিলেটে প্রচুর সঞ্চয় রয়েছে, বিনিয়োগ নেই। কৃষিতে পিছিয়ে আছে। এক-তৃতীয়াংশ পতিত জমি রয়েছে। সিলেটবাসীদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা খুব ধনী ও আয়েশী। আমি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কাছে খুবই লজ্জিত। আমি তার কাছে কোনো জবাব দিতে পারি না। 
অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতা শুরুর আগে প্রবাসীরা দুটি বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সিলেটে সরাসরি আন্তর্জাতিক রুটের বিমান অবতরণ এবং রেল খাতের উন্নয়ন। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম(রহিম) বলেন, ব্রিটিশ আমলে সিলেট অঞ্চলে স্থাপিত রেললাইন এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে সাবাসপুর থেকে কুলউয়াড়া পর্যন্ত লাইনটি প্রায় অচল। তিনি বলেন, সিলেটের রেললাইনটি বেশ অবহেলিত। তিনি রেললাইন ও রেল সার্ভিসের উন্নয়নের দাবি জানান। 
এসব দাবির প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী বলেন, সিলেট বিমান বন্দরে রি-ফুয়েলিংয়ের সমস্ত ব্যবস্থা মাস খানেকের মধ্যে হয়ে যাবে। বিমানের উঠানামার সমস্ত কাজ শেষ হয়েছে। সিলেটের পুরানো জেলখানা এলাকাকে পার্কে রূপান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমার প্রকল্প। বিদ্যমান তিনটি পুকুর সহ এ পার্ক নির্মাণ হবে। সিটি করপোরেশনকে এ পার্ক স্থাপনের দায়িত্ব দেয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দেয়া হলে সেখানে তারা দোকান বানাবে।

No comments

Powered by Blogger.