ভয়ঙ্কর এক খুনির গল্প by ইমরান আলী

মানুষ সৃষ্টির সেরা  হলেও মানুষে মানুষে রয়েছে প্রকার ভেদ। ভাল এবং মন্দ। তবে শুধু মন্দই নয়, সামান্য কারণে, কখনও বিনাকারণে মানুষের মন্দ দিকটা ফুটে উঠে। আর তা রীতিমতো তার সগোত্রীয় আরেকজন মানুষকে খুন করার মাধ্যমেও হতে পারে। ইতিহাসে আমরা অনেক খুনির বিস্তারিত পাই। কেউ খুন করেছে তিন শতাধিক, কেউ শতাধিক, কেউ এক ডজন বা তার কম। সংখ্যায় যে ক’টাই হোক না কেন খুন তো খুনই। এরচেয়ে বড় অপরাধ আর কি হতে পারে। মানুষকে হত্যা করে সে মৃতদেহ ভক্ষণ করাও কি কম অপরাধ। এমন খুনির উদাহরণ ইতিহাসে ভূরি ভূরি। জোয়াছিম ক্রল (১৭ এপ্রিল, ১৯৩৩, জার্মান) ক্ষীণকায় শরীরে বেড়ে ওঠা তেমনই এক খুনি এবং রাক্ষস। ক্রলের মা মারা যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় তার বীভৎস সব কৃতকর্ম। খুন শুরু হয় একজন টয়লেট ক্লিনারকে  ধর্ষণ শেষে হত্যার  মধ্য দিয়ে।  জার্মান এই সিরিয়াল কিলার ৮টি খুনের সরাসরি অভিযুক্ত হলেও দোষী ছিল ১৪টি  খুনের।

জুলাই ১৩, ১৯৭৬। ম্যারিওন কেটার নামের চার বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুকে অপহরণ ও খুনের দায়ে গ্রেপ্তার হয় ক্রল।  পুলিশ বাড়ি বাড়ি ঘুরছিল মেয়েটির সন্ধানে। ক্রলের এপার্টমেন্টের এক প্রতিবেশী  ক্রলকে যখন জানায় তার বাসার পয়ঃনিষ্কাশনের পাইপটি ময়লায় ব্লক হয়ে  গেছে। তখন নাকি ক্রল খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে উত্তর দিয়েছিল- নাড়িভুড়িতে এমনটা হয়েছে।
ভ্যাবাচেকা খেয়ে যান ক্রলের প্রতিবেশী এমন উত্তর শুনে। পরবর্তীতে ওই প্রতিবেশীর কথা শুনেই পুলিশ ক্রলকে সন্দেহ করে। পুলিশ ক্রলের এপার্টমেন্টে তল্লাশি চালায়। ম্যারিওনের ছিনভিন্ন শরীর তারা দেখতে পায়। শরীরের কিছু অংশ কেটে রাখা হয়েছে ফ্রিজে, কিছু অংশ মেজেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা, হাত কেটে রাখা হয়েছে গরম পানিতে – যা দিয়ে ক্রল রান্না করতে চেয়েছিল। আর নাড়িভুড়ি ফেলেছিল ময়লা নিষ্কাশনের পাইপে। এক জবানবন্দিতে ক্রল জানায়, গ্রোসারি শপের বিল বাঁচাতেই তার এই বিকৃত রুচির আবির্ভাব হয়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদেরকে ধরে নিয়ে খুন করে। শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আলাদা করে টুকরো টুকরো করে রান্নার জন্য প্রস্তুত করে। বন শহরের কাছে এক জেলে ১৯৯১ সালে এই খুনি মারা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। যে অপরাধী তার অন্যায়কে অন্যায় মনে করেনি কখনও, যে ঠা-া মাথায় একের পর এক খুন করেছে তাকে কিভাবে শুধু অপরাধী বলা যায়। সে মূলত ইতিহাসের সবচেয়ে নোংরা ও কুখ্যাত খুনি হিসেবেই জায়গা পাওয়ার যোগ্য।

No comments

Powered by Blogger.