বিজেপিতে মোদিরাজ চূড়ান্ত

লালকৃষ্ণ আদভানি ও মুরলি মনোহর জোশি
বিজেপিতে লালকৃষ্ণ আদভানি ও মুরলি মনোহর জোশির দিন শেষ হয়ে এল। গতকাল মঙ্গলবার দলের নবগঠিত সংসদীয় বোর্ড থেকে প্রবীণ এই দুই নেতাকে বাদ দেওয়া হলো। তাঁদের করা হয়েছে দলের ‘মার্গ দর্শক’ অর্থাৎ কিনা পরামর্শক। দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্তগ্রহণকারী এ বোর্ড থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ অটল বিহারি বাজপেয়িও। তাঁকেও মার্গ দর্শক করা হয়েছে। দলে মার্গ দর্শক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও। লক্ষ্যণীয়, মঙ্গলবার মার্গ দর্শকের যে তালিকা প্রচারিত হয়েছে তাতে বাজপেয়ির পরে এবং আদভানির ওপরে রয়েছে মোদির নাম। এই বিন্যাসের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার, বিজেপিতে বাজপেয়ি, আদভানি, জোশিদের যুগ একেবারে শেষ হয়ে শুরু হলো নরেন্দ্র মোদি ও সভাপতি অমিত শাহর নিরঙ্কুশ প্রাধান্য।
দলে এখন এই দুজনের ভূমিকা এমনই একচেটিয়া যে ১২ জনের সংসদীয় বোর্ডে সেই অর্থে মোদিবিরোধী কাউকেই রাখা হয়নি। বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে অমিত শাহকে। এর মধ্য দিয়ে এটাও বুঝিয়ে দেওয়া হলো সরকারে যেমন মোদিই প্রথম ও শেষ কথা, সংগঠনেও তেমন একমেবাদ্বিতীয়ম্ অমিত শাহ। সংসদীয় বোর্ডের বাকি সদস্যরা হলেন রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, নীতিন গড়কড়ি, অনন্ত কুমার, খেবরচাঁদ গেহলট, শিবরাজ সিং চৌহান, জগদীশ প্রসাদ নাড্ডা এবং রামলাল। এঁদের মধ্যে আদভানির অনুগামী এবং মোদির বিরোধী বলতে একজনই, সুষমা স্বরাজ। কিন্তু দলে এই মুহূর্তে প্রথম সারির নেত্রী বলতে একমাত্র তিনিই। সুষমার পেছনে জনসমর্থনও রয়েছে। বক্তা হিসেবেও তিনি দারুণ। তাই আদভানি, জোশিদের মতো তাঁকে ছেঁটে ফেলা সহজ নয়। তবে সুষমা ছাড়া বাকি সবাই পুরোপুরি মোদি-শাহ ঘনিষ্ঠ। মার্গ দর্শকদের কাজ ঠিক কী হবে, বিজেপি নেতৃত্ব তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। দলীয় মুখপাত্র শাহনাওয়াজ হোসেন বলেছেন, মার্গ দর্শকরা সবার ওপরে। তাঁরাই দলকে দিশা দেখাবেন। কংগ্রেস অবশ্য এই নতুন ব্যবস্থাকে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ বলছে।

No comments

Powered by Blogger.