দারিদ্র্যের কারণ খুঁজতেই অর্থনীতি পড়েন মনমোহন

মনমোহন সিং
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাবা চেয়েছিলেন যে তাঁর ছেলে চিকিৎসক হোক। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে মনমোহন ‘প্রি-মেডিকেলে’ ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই আগ্রহ হারিয়ে চিকিৎসাবিদ্যা পড়া বাদ দেন। একসময় বেছে নেন অর্থনীতি। আর সে পথ ধরেই প্রতিষ্ঠা পান জাতীয় রাজনীতিতে। মনমোহনকন্যা দামান সিংয়ের লেখা স্ট্রিক্টলি পারসোনাল: মনমোহন অ্যান্ড গুরশরণ বইয়ে এ ধরনের নানা অজানা কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এতে মনমোহন সিং-গুরশরণ কাউর দম্পতির জীবনের নানা কথা থাকলেও মনমোহনের প্রধানমন্ত্রিত্বের ১০ বছর নিয়ে কোনো কিছুই নেই। খবর পিটিআই। বইতে লেখা হয়েছে, প্রি-মেডিকেলের পড়া ভালো না লাগায় কিছুদিন বাবার দোকানে কাজ করেন মনমোহন। কিন্তু সেখানেও মন টেকেনি। আবার পড়াশোনায় ফেরেন।
এবার অর্থনীতিতেই খুঁজে পান আনন্দ। বাবা-মার সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতা আর গ্রন্থাগার ও আর্কাইভসের সাহায্য নিয়ে বইটি লিখেছেন দামান সিং। এটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা হারপার কলিন্স ইন্ডিয়া। মনমোহন ১৯৪৮ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে অর্থনীতি তাঁকে আকৃষ্ট করল। বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ী, মনমোহন তাঁর মেয়েকে বলেছিলেন, ‘দারিদ্র্য বিষয়টি আমাকে আকৃষ্ট করত সবচেয়ে বেশি। একটা দেশ কেন দরিদ্র থাকে, কেন কোনো দেশ ধনী হয়, এসব বিষয়ে ভাবতাম। আর আমাকে এই ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে অর্থনীতিই সেই বিষয়, যেখানে এসব প্রশ্নের উত্তর আছে।’ বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, পরবর্তী সময়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বেশ অর্থকষ্টে ভুগতেন মনমোহন। সে সময় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি বাবদ পেতেন বছরে ১৬০ পাউন্ড। কিন্ত কেমব্রিজে খরচ হতো ৬০০ পাউন্ড। মনমোহনের চরিত্রের একটি মজার দিক হলো, তিনি তাঁর পরিচিতদের ডাকনাম দেন। দামান লিখেছেন, তাঁর বাবা নিজের এক ভাইয়ের নাম দিয়েছেন ‘জন বাবু’, আরেকজনের নাম ‘জুয়েল বাবু’। মনমোহন নিজের স্ত্রীকে আদর করে ডাকেন ‘গুরুদেব’। তিন কন্যাসন্তানকে ডাকেন ‘কিক’, ‘লিটল রাম’ এবং ‘লিটল নোয়া’ বলে।

No comments

Powered by Blogger.