যুক্তরাষ্ট্রের ফার্গুসনে কারফিউ, একজন গুলিবিদ্ধ, গ্রেপ্তার ৭

মিজৌরির ফার্গুসন শহরতলিতে শনিবার মধ্যরাতে কারফিউ
ভেঙে রাস্তায় নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পুলিশ
কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। পাল্টা পুলিশের দিকে ছোড়ার
জন্য শেল কুড়িয়ে নিচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ছবি: রয়টার্স
সপ্তাহব্যাপী সহিংসতার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের ফার্গুসন শহরতলিতে কারফিউ জারি হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাত থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ জারি ছিল। রাজ্যের গভর্নর জে নিক্সন এর আগের দিন জরুরি অবস্থা জারি করে কারফিউয়ের ঘোষণা দেন। পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ নিহত হওয়ার জেরে সেন্ট লুইসের ওই শহরতলিতে এক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে, যা প্রায়ই সহিংস হয়ে ওঠে। কারফিউ শুরু হওয়ার পরও তা উপেক্ষা করে ৫০ জনের মতো লোক বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হলে একজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থল থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খবর বিবিসি ও সিএনএনের। পুলিশের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন রন জনসন বলেন, কারফিউ শুরু হওয়ার আগে অন্তত ১৫০ জন বিক্ষোভকারী রাস্তায় অবস্থান করছিল। একপর্যায়ে পুলিশের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা গুলি ছোড়ে। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
এ ছাড়া ধোঁয়া বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষ চলাকালে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্যাপ্টেন জনসন বলেন, ওই ব্যক্তিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন কি না এ বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। ৯ আগস্ট ফার্গুসনের একটি সড়কে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে মাইকেল ব্রাউন (১৮) নামের এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠে। এরপর থেকেই ব্যাপক বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ সহিংস হয়ে ওঠে ও স্থানীয় দোকানপাটে লুটপাট চালায়। গত শুক্রবার ফার্গুসনের পুলিশপ্রধান তরুণ মাইকেল ব্রাউনকে গুলি করা পুলিশের নাম প্রকাশ করেন। এ ছাড়া সিসিটিভিতে ধারণ করা একটি ভিডিওচিত্রও প্রকাশ করে পুলিশ। এতে দেখানো হয়, ব্রাউন স্থানীয় একটি দোকান থেকে সিগারেট চুরি করছেন। ভিডিও অনুযায়ী পরে দোকানিকে ভীতিপ্রদর্শনও করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। ব্রাউনের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই ভিডিওচিত্র প্রকাশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইনবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ভিডিওচিত্রটি প্রকাশ করেছে পুলিশ। ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর বিক্ষোভ-কারীরা আরেক দফা ফুঁসে ওঠে। এর জের ধরে শনিবার কারফিউ জারি হয়। স্থানীয় অনেক কৃষ্ণাঙ্গ বলছেন, কৃষ্ণাঙ্গ বলেই বেপরোয়াভাবে গুলি করা হয় মাইকেল ব্রাউনকে। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে কখনো কখনো মাথা চাড়া দেওয়া সাদা-কালো সম্পর্কের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে এসেছে।

No comments

Powered by Blogger.