ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা চলছেই...

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা চলছেই। গতকালের হামলায় ৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবারে হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে মসজিদ। ইসরাইলি ধ্বংসলীলায় তিনটি মসজিদ মাটিতে মিশে গেছে। আর, হামাস পাল্টা রকেট ছুড়েছে ইসরাইলে। এদিকে কায়রোতে থমকে গেছে যুদ্ধবিরতি আলোচনা। গাজায় মসজিদ লক্ষ্য করে ইসরাইলের হামলা এটাই প্রথম নয়। ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির আগে তারা নৃশংসভাবে অনেকগুলো মসজিদ, হাসপাতাল, জাতিসংঘের স্কুল, জনবসতিতে হামলা চালিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। এতে পুরো গাজা হয়ে পড়ে এক মৃত্যু উপত্যকা। যুদ্ধবিরতির সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর পরই ইসরাইল নতুন করে তীব্র হামলা শুরু করে গাজায়। ফিলিস্তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতের পর ৩০বার হামলা চালিয়েছে। এতে ধ্বংস হয়েছে তিনটি মসজিদ। এর একটি জেইতাউন এলাকায়, একটি উত্তরের জাবালিয়াতে। অন্যটি নুসেইরাতে ছিটমহলে। গাজা জরুরি সেবা দপ্তরের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা বলেন, আল মাঘাজি ক্যাম্পে একটি  মোটরবাইককে লক্ষ্য করে ছোড়া হামলায় নিহত হয়েছেন দু’জন। আর নুসেইরাত ক্যাম্পে আল কাসাম মসজিদের ধ্বংসাবশেষের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তিন ব্যক্তির লাশ। বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, নুসেইরাতের বিরাট আল-কাসাম মসজিদ এখন ধুলোয় মিশে গেছে। দাঁড়িয়ে আছে শুধু একটি মিনার। এদিকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু সেগুলো মরুভূমি এলাকায় আছড়ে পড়ায় কোন হতাহত হয়নি। শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকেই আবারও চড়াও হয় ইসরাইলি বাহিনী। ৮ই জুলাই শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত মারা গেছেন কমপক্ষে ১৮৯৮ ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৪৪৭টি শিশু। পক্ষান্তরে নিহত ৬৭ ইসরাইলির বেশির ভাগই সেনা। শুক্রবার মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা আবারও ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা এখনও ইসরাইলি পক্ষ থেকে জবাব আসার অপেক্ষা করছেন। শুক্রবারের হামলায় ১০ বছরের এক বালকসহ নিহত হন ৫ ফিলিস্তিনি। মিশর জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার আগ দিয়ে সমঝোতার অগ্রগতি হয়েছিল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এমন বেশির ভাগ বিষয়েই সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু সীমিত কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে যায়। ওই সমঝোতা প্রক্রিয়া ভেঙে যাওয়ার পর গাজা থেকে ইসরাইলে ৪৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এতে আহত হয়েছে একজন বেসামরিক লোক আর একজন সেনা। পক্ষান্তরে শুক্রবারের পর থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী আকাশপথে ১০০ বার হামলা চালিয়েছে। এদিকে ইসরাইলে একটি গ্রুপ পিস নাও সমর্থকদের উদ্দেশে শুক্রবার রাতে তেল আবিবে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তারা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ও কূটনৈতিক সমাধানের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.