শরিক খুঁজছে বিজেপি

যতই জোয়ার তুলুন, সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক আসন হবে না জেনেই এখন শরিক খুঁজছেন নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার এভাবেই মোদিকে তোপ দাগলেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী। বৃহস্পতিবার টাইমস নাও চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মমতা-মায়াবতী-জয়ললিতার মতো নেত্রীদের জন্য তার দরজা খোলা। তার যুক্তি ছিল, প্রাক-ভোট শরিকদের নিয়ে এনডিএ ৩৫০টি আসন পেলেও কোনো এক নির্দল সংসদ সদস্যকেও তিনি সমান গুরুত্ব দেবেন। মোদির এই বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মায়াবতী শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে জানান, গোটা দেশে মোদি-হাওয়া রয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বুঝে এখন শরিক খুঁজছে বিজেপি।
ভোটের পরেও বহুজন সমাজ পার্টি কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপিকে সমর্থন করবে না। বৃহস্পতিবারই এক সাক্ষাৎকারে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের পর প্রয়োজনে এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা, তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর সমর্থন চাইবেন তারা। এনডিএতে তাদের যোগ দেয়ার ব্যাপারে তিনি যে আশাবাদী, জানিয়েছিলেন সে কথাও। এরই জবাবে শুক্রবার বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর বক্তব্য, আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, কোনো মূল্যেই এনডিএকে সমর্থন করবে না বিএসপি। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে মোদির দাবি ছিল, এনডিএর সরকার গড়ার জন্য অন্য কোনো দলের সমর্থন প্রয়োজন হবে না। জয়ের ব্যাপারে সন্দিহান না হলে কোনো দল অন্য দলের সমর্থন নেয়ার কথা বলে না... সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে ভোটাররা আমাদের ভোট দেন, তাদের মনে সন্দেহ তৈরি করতেই মোদির এই সাক্ষাৎকার। একইসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে নোংরা রাজনীতির অভিযোগও আনেন মায়াবতী। মোদির এই বার্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েনও। তার কথায়, এনডিএ-র দরজা যদি খোলা থাকে, তবে আমাদের দরজা বন্ধ করে দিয়ে চাবি ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। বিজেপির ৩৭২টি আসন জেতার স্বপ্ন অলিক কল্পনা, খুব বেশি হলে ১৮০-১৯০টি আসন পাবে তারা।
এরপরই এক সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতা অমিত শাহের আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য, সরকার গড়ার জন্য ৩০০টিরও বেশি আসন জিতবে এনডিএ। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি রাজনৈতিক অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস করে না। দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চাইলে এনডিএতে সবদলই স্বাগত। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, যে তিন নেত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সাক্ষাৎকারে তাদের মধ্যে মমতা ব্যানার্জির পক্ষে সরাসরি এনডিএতে যোগ দেয়া কঠিন। তবু বিজেপি ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখতে চাইবেন মমতা। তেমনই উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর সমর্থন নেয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে সংখ্যার নিরিখে। যদি উত্তরপ্রদেশে মোদি হাওয়া ঠিকমতো কাজ করে, তা হলে দলের আসন ৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা কাজ না করলে সেটি ৩০-এর কোঠায় এসে দাঁড়াবে। যদি বিজেপির সংখ্যা ৪০-ও ছাড়ায়, তাহলেও সুদূরপ্রসারী রণনীতির কথা মাথায় রেখে মায়াবতীর সাহায্য না নেয়াই ভালো। কারণ, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিরই লোকসান। মায়াবতীও চাইবেন না, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের ভিত নষ্ট করতে। কারণ, বিজেপি ও মায়াবতী একই ভোটব্যাংকে থাবা বসাতে চাইছে। আর মোদির এই বক্তব্যের পরে জয়ললিতার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া অবশ্য আসেনি। 
এনডিএতে সব দলই স্বাগত
সরকার গড়ার জন্য ৩০০টিরও বেশি আসন জিতবে এনডিএ। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি রাজনৈতিক অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস করে না
অমিত শাহ
আমাদের দরজা বন্ধ
ভোটের পরেও বহুজন সমাজ পার্টি কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপিকে সমর্থন করবে না
মায়াবতী

No comments

Powered by Blogger.