বিতর্কিত নির্বাচনের পথে ইংলাক

ইংলাক সিনাওয়াত্রা
থাইল্যান্ডের সরকার আগামী রোববার একটি বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথেই এগিয়ে যেতে চায়। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী থুরাপং তোভিচাকচাইকুল গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সভাস্থলের কাছাকাছি গুলিতে দুজন আহত হয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা ইংলাক সরকারঘোষিত নির্বাচন ভন্ডুল করার হুমকি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক এ রকম পরিস্থিতিতেই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
রাজপথে সরকারবিরোধী সহিংসতায় অন্তত ১০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার পর ওই কর্মকর্তারা এখন নির্বাচন পিছিয়ে দিতে আগ্রহী। নির্বাচন কমিশনের মতে, দেশে এখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো স্থিতিশীল অবস্থা নেই। সর্বশেষ গতকাল রাজধানী ব্যাংককের উত্তরাঞ্চলে একটি সামরিক দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক চলাকালে বাইরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের একজন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী বলে দাবি করা হচ্ছে। অন্যজন হচ্ছে হামলাকারী নিজেই। ইংলাক সিনাওয়াত্রা গত ডিসেম্বরে পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন করে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর অধীনে নির্বাচনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে ওই বিক্ষোভকারীরা। নির্বাচন কমিশন মনে করছে, আগামী ২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীরা নিজেদের নাম নিবন্ধন করার জন্যও পর্যাপ্ত সময় পাবেন না।
থাইল্যান্ডে আট বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। বর্তমানে দেশটির মধ্যবিত্ত ও রাজতন্ত্রের সমর্থক জনগোষ্ঠী এবং ইংলাক সিনাওয়াত্রার সমর্থক দরিদ্র ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠী পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের মতে, প্রধানমন্ত্রী ইংলাক ও তাঁর ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের শাসনামলে থাইল্যান্ডের গণতন্ত্র নাজুক রূপ নিয়েছে। এখন নির্বাচনব্যবস্থা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশকে সিনাওয়াত্রা পরিবারের প্রভাবমুক্ত করতে হবে। তিন মাস চলা আন্দোলন কর্মসূচি দমনের লক্ষ্যে গত সপ্তাহে জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও সরকার তেমন দমন-পীড়ন শুরু করেনি। তবে শ্রমমন্ত্রী চারের্ম ইউবুমরাং বলেন, সমঝোতা আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বিক্ষোভের নেতা সুথেপ থগসুবান ও তাঁর সহযোগীরা। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.