সিরিয়ার অর্ধেক অস্ত্রাগার পরিদর্শন শেষ

সিরিয়ার অস্ত্রাগারের অর্ধেক পরিদর্শন শেষ করেছে আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র পর্যবেক্ষক ওপিসিডব্লিউ। সিরিয়াবিষয়ক রাজনৈতিক উপদেষ্টা মালিক ইলাহি বলেন, (অস্ত্র) যাচাই কাজের প্রায় ৫০ শতাংশ আমরা শেষ করেছি। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করার উদ্দেশে সিরিয়ায় কাজ করছে ২০১৩ সালে শান্তি নোবেল পাওয়া ওপিসিডব্লিউ। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে কাজে নামার জন্য নোবেল পেয়েছে হেগভিত্তিক এ সংস্থাটি।
জাতিসংঘের সহায়তায় ওপিসিডব্লিউর ৬০ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল এ মাসের শুরু থেকে সিরিয়ায় কাজ করছে। গত সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে জাতিসংঘের প্রস্তাব মোতাবেক কাজ করছে ওপিসিডব্লিউ। বিষাক্ত সারিন গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ এনে সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ১৯ সেপ্টেম্বর ওপিসিডব্লিউর কাছে রাসায়নিক অস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য হস্তান্তর করে সিরিয়ার সরকার। রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকার ‘সহযোগিতা’ দিচ্ছে বলে জানিয়েছে ওপিসিডব্লিউ।
শান্তি সম্মেলনের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি : সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থামানোর লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সম্মেলনের তারিখ নভেম্বরের ২৩-২৪ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সিরিয়ার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করলেও সহ-আয়োজক রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তা অস্বীকার করেছে। প্রকাশিত তারিখের বিষয়ে সিরিয়াবিষয়ক জাতিসংঘ শান্তিদূত লাখদার ব্রাহিমির এক মুখপাত্রও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার সিরিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী কাদরি জামিল মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে ওই তারিখের কথা জানিয়েছিলেন।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেকজান্দার লুকাশেভিচ বলেন, ‘আমরা নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারবো না। এই তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সিরীয় কর্মকর্তার নয়। এটি জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব। এরপর বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও তার প্রতিক্রিয়া জানায়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, ‘সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, তবে কোনো তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি। জাতিসংঘ নির্ধারণ করে ঘোষণা না করা পর্যন্ত কোনো তারিখই চূড়ান্ত নয়।’ অন্যদিকে সিরিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জামিল তার প্রতিক্রিয়ায় রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এ তারিখের কথা বান কি মুন (জাতিসংঘ মহাসচিব) বলেছেন, আমি নই।’
নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অস্ত্র পরিদর্শকরা : অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপন্স বা ওপিসিডাব্লিউ বলছে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকায় তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিবিসি এ খবর জানায়। ওপিসিডাব্লি’র একজন মুখপাত্র জানান, নিরাপত্তার আশ্বাস না পাওয়ার কারণে তারা নির্ধারিত একটি অস্ত্র এলাকায় যেতে পারেননি। আমেরিকা ও রাশিয়ার সমঝোতা অনুসারে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করার কাজ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটল। তিনি জানান, রাজধানী দামেস্কে তারা যে হোটেলে অবস্থান করছেন, তার কাছেই বুধবার রাতে মর্টার হামলা হয়েছে।
শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহত : সিরিয়ার শীর্ষস্থানীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা। দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সদ্য সংবাদে জানানো হয়, ‘দেইর এজ্জরে সিরিয়া ও এর জনগণের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জাতীয় দায়িত্ব পালনের সময় মেজর জেনারেল জাম্মা শহীদ হয়েছেন।’ জাম্মা নিহত হওয়ার ব্যাপারে সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার পরিচালক রামি আবদেল রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক প্রতিবেদন দেখে মনে হচ্ছে দেইর এজ্জর সিটির রাশদিয়া জেলায় একজন গুপ্তঘাতক জাম্মাকে গুলি করে হত্যা করেছে।

No comments

Powered by Blogger.