কী নৃশংস!!

রাজধানীর নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিফাত নামে এক ছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করে পরে মুক্তিপণের ৫০লাখ টাকা নিতে এসে আটক হয়েছেন তারই বন্ধু মাসুদ রানা সুমন (২৫)ও লিংকন সরকার (২৩) নামে দুইজন।
বৃহস্পতিবার রাতে মাসুদ রানা সুমন পূর্ববাজারে ব্র্যাক ব্যাংকের  কাছে মুক্তিপণের টাকা নিতে এসে র‌্যাবের হাতে আটক হন।

পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী,  রাজাবাজারের বাসা থেকে রিফাতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব-২ এর একটি দল।

র‌্যাব-২-এর অপারেশন অফিসার এডিশনাল এসপি রায়হান বাংলানিউজকে জানান, ৮ অক্টোবর নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ে নবম সেমিষ্টারের ছাত্র রিফাতকে (২৩) তারই বন্ধু মাসুদ রানা সুমন (২৫) ফুঁসলিয়ে ৭২ রাজাবাজারের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে চেতনানাশক পানিয় খাইয়ে অজ্ঞান করে হাত-পা বেঁধে রাখে।

৮ অক্টোবর থেকে মাসুদ রানা সুমন  রিফাতের বাবা মাওলানা ফজামিয়ের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে কয়েক দফা তার মোবাইল ফোনে ফোন করেন।

উপায়ান্তর না দেখে রিফাতের বাবা কক্সবাজার থেকে ঢাকায় চলে আসেন এবং বিষয়টি শেরেবাংলানগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে র‌্যাবের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।

র‌্যাব– ২ এর সদস্যরা প্রথমে রিফাতের পরিবারের সদস্য সেজে মাসুদ রানা সুমনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে মুক্তিপণের বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেন। এরই  মধ্যে মাসুদ তার বাসায় অপহরণ করা রিফাতকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে ফেলে রাখেন।

এদিকে, ৯ অক্টোবরের পর মাসুদ রিফাতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরে র‌্যাব সদস্যরা রিফাতের এক বান্ধবীর মাধ্যমে মাসুদকে আবারও মুক্তিপণ দিতে ফোনে দেনদরবার শুরু করেন।

তার বান্ধবীর কথা মতো মাসুদ রানা সুমন বৃহস্পতিবার ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রস্তাব দিলে এত টাকা ব্যাংকে জমা দিলে কেউ সন্দেহ করবে সে কারণে র‌্যাব সদস্যরা রিফাতের বান্ধবীকে সরাসরি টাকা লেনদেন করার পরামর্শ দিলে তাতে রাজি হয় মাসুদ।

তখনও কেউ ধারণা করতে পারেননি যে, রিফাতকে হত্যা করা হয়েছে।

মাসুদের কথা মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজাবাজারের ব্র্যাক ব্যাংকের কাছে মাসুদ তার বন্ধু লিংকনকে সঙ্গে নিয়ে টাকা নিতে আসলে র‌্যাব সদস্যরা আটক করে রিফাতের অবস্থান জানতে চান।

এ সময় প্রথমে মাসুদ অস্বীকার করলে ও জিজ্ঞাবাদের এক পর্যায়ে রিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে র‌্যাবকে জানান যে, ৭২ পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় তাকে দুই দিন আগেই হত্যা করা হয়েছে। পরে র‌্যাব ও শেরে বাংলানগর থানার পুলিশ ওই বাসা থেকে রিফাতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন।

রিফাতের বাড়ি কক্সবাজার সদরে। ঢাকার পান্থপথ এলাকার গ্রীনরোডের গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পাশে কয়েক বন্ধু মিলে রিফাত একটি মেসে ভাড়া করে তারা থাকতেন।

No comments

Powered by Blogger.