সর্দি কাশি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট
গত ২ সপ্তাহ যাবৎ আমরা লৰ্য করছি সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের বাচ্চারোগীতে ভরপুর হাসপাতাল কিনিকগুলো। বাচ্চাগুলোর বয়স ৩ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে।
তাপমাত্রার উর্ধগতি, শ্বাসকষ্ট এবং কাশি। নিউমোনিয়া ও ব্রংকোলাইটিস রোগীর সংখ্যাই বেশি। নিউমোনিয়াদ্রম্নত শ্বাস-প্রশ্বাস, নবজাতকের ৰেত্রে >৬০ বার/ মিনিট ১ বছরের মধ্যের বাচ্চাদের ৰেত্রে >৫০ বার/ মিনিট এবং ১-৩ বছরের ৰেত্রে >৪০ বার/মিনিটকে আমরা দ্রম্নত শ্বাস-প্রশ্বাস বলব।
০ বুকের খাঁচার নিচে দেবে যাবে
০ নাকের ডগা ফুলে যাওয়া শ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে।
০ গায়ের তাপমাত্রার উর্ধগতি এমনকি ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইটে উপনীত হতে পারে।
০ বাচ্চার চেহারাতে একটি কানত্মি ও অসুস্থতার ভাব প্রকট থাকে।
০ কাশি_রাত্রিকালীন কাশের প্রকোপ বেশি হতে পারে এবং সকাল ভোরের দিকে।
০ কফ_ছোট্ট বাচ্চাদের ৰেত্রে কফ নাও বের হতে পারে।
০ বুকে ঘড় ঘড় আওয়াজ পাওয়া যেতে পারে।
০ এই সব শিশুদের ৰেত্রে সাধারণত স্ট্রেপটো কক্কাস, হিমোফিলাস ইনফুয়েঞ্জি ও স্টাফাইলো কক্কাস রোগের জীবাণু দ্বারা আক্রানত্মের সংখ্যাই বেশি। কিছু ভাইরাসও জড়িত থাকতে পারে।
এৰেত্রে_
০ বাচ্চার যদি খুব শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে হাসপাতালে নেওয়াই ভাল। তিন মাসের নিচে বাচ্চাদের হাসপাতালে ভর্তি করম্নন। কিংবা শিশু নীল হয়ে যাচ্ছে বারে বারে, তাদের হাসপাতলে ভর্তি করতে হবে।
০ আপনি আপনার পারিবারিক শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
০ তবে যদি শ্বাসকষ্ট অতটা না থাকে তাহলে বাসায় চিকিৎসা করা যেতে পারে।
সেৰেত্রে_
০ বাচ্চার জ্বর কমাতে সিরাপ প্যারাসিটামল ব্যবহার করম্নন। ওজন অনুযায়ী ১৫ মি.গ্রা./কেজি/ প্রতিসেবনে ৪ বার উর্ধে ৬ বার পর্যনত্ম ব্যবহার করতে পারেন। প্যারাসিটামল দেয়ার আধ ঘণ্টা পর কুসুম গরম পানি দিয়ে গা-হাত, পা-মাথা মুছিয়ে দিন আধা ঘণ্টা ধরে।
০ এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে_ আমরা এ বয়সের বাচ্চাদের ৰেত্রে সাধারণত এ্যামোক্সিসিলিন বা তৃতীয় জেনারেশন সেফিক্সিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এ্যান্টিবায়োটিক ডাক্তারের পরামর্শেই ব্যবহার করা ভাল। নাক-গলা বাল্ব সাকার দিয়ে পরিষ্কার করম্নন।
০ নাকে নরমাল স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার করম্নন, ১ ফোঁটা করে ২ নাকে ৪ বার/৬ বার দিয়ে পরিষ্কার রাখুন নাসিকা পথ।
০ শ্বাসটান বা বুকের আওয়াজের জন্য আমরা সিরাপ স্যালবিউটামল বা নেবুলাইজেশন মেশিনে বাষ্পায়িত স্যালভিউটামল ব্যবহার করতে বলি।
ব্রংকোলাইটিস বা শিশু হাঁফ
এৰেত্রে নিউমোনিয়ার মতো বাচ্চা অত অসুস্থ হবে না। বাচ্চা মোটামুটি হাসি-খুশি থাকবে কিন্তু বুকে বাঁশির মতো আওয়াজ থাকবে।
০ অল্প তাপমাত্রা বাড়বে। ১০০ থেকে ১০১ ডিগ্রী ফারেনহাইট হতে পারে। প্রথমে নাক দিয়ে পানি পড়ে তারপর দু'একদিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট শুরম্ন হয়।
০ ব্রংকোলাইটিস সাধারণত রেসপিরেটরি ভাইরাস দিয়ে বেশি হয়। তবে অন্য ভাইরাস যেমন ইনফুয়েঞ্জা প্যারা ইনফুয়েঞ্জা এ্যাডিনো ভাইরাস দিয়ে হতে পারে।
০ ২ মাস থেকে ২ বছর এর বয়স সীমা। তবে ৬ মাস থেকে ৯ মাস পর্যনত্ম বাচ্চাদের ৰেত্রে প্রকোপ বেশি হয়।
এৰেত্রে_
০ বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে পারেন।
০ নাক-গলা পরিষ্কার করতে হবে। বাল্ব সাকার ব্যবহার করতে পারেন।
০ বেশি করে তরল খাদ্য খাওয়াতে হবে।
০ নাকে নর্মাল স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
০ আমরা স্বভাবত এ্যান্টিবায়োটিক দেব না। তবে বাচ্চার বয়স যদি ৩ মাসের নিচে হয় তবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করব এবং এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করব। কিংবা নতুন করে বুকে বাড়তি প্রদাহ হয় বা তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পায় তবে এ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।
০ শ্বাসকষ্টের জন্য সিরাপ স্যালবিউটামল বা বাষ্পায়িত স্যালবিউটামল ব্যবহার করা যেতে পারে।
জ্বরের জন্য সিরাপ প্যারাসিটামল ব্যবহার করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, বাচ্চার বয়স যদি ৩ মাসের নিচে হয় বা বাচ্চা যদি এ্যান্টিক্যান্সার ড্রগ পায় বহুদিন ধরে কিংবা বাচ্চা অন্য কোন রোগের কারণে স্টেরয়েট পায় বেশ কিছুদিন ধরে সে ৰেত্রে ব্রংকোলাইটিস খারাপ হতে পারে। সে ৰেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
ডা. অনিরম্নদ্ধ, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল
No comments