চট্টগ্রামে কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা-অবৈধভাবে রেল জমি ইজারা by মাকসুদ আহমদ

রেলের পূর্বাঞ্চলে অবৈধভাবে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেয়ায় রেলের সাবেক ২ অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পূর্বাঞ্চলের সাবেক দুই মহাব্যবস্থাপকসহ ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার এ দুটি মামলা দায়ের করেন দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপসহকারী পরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবির।
চমানায় উট্টগ্রাম স্টেশন কভার হাউসের সম্মুখস্থ প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের জমি মাত্র ৩০ লাখ টাকায় ইজারা দেয়ার ঘটনায় এ মামলা দায়ের হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চউকের পক্ষ থেকে নির্মাণ বিধিমালা না চ্ছেদের নোটিস প্রদান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে চউক কর্মকর্তারা অর্থ বাণিজ্যে ম্যানেজড হয়ে নির্মাণে বাধা দেয়নি। এদিকে দু’টি মামলায় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের ৪ কর্মকর্তাকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময়ে রেল কর্মকর্তারা ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন স্থানে কৃষি ভূমিকে বাণিজ্যিক আর বাণিজ্যিক ভূমিকে কৃষি দেখিয়ে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছে। শুধু রেল ভূমি নয়, রেলের নিয়োগকে কেন্দ্র করে ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৫শ’ কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে নিয়োগ প্রার্থীদের কাছ থেকে। বুধবার এ মামলার ঘটনায় সিআরবি প্রাঙ্গণে ছিল নানা গুঞ্জন। নিয়োগ প্রার্থীদের অভিভাবকসহ পোষ্যদের পক্ষ থেকে কর্মরতরা দুদকের প্রতি দাবি জানিয়েছেন এ নিয়োগ বাণিজ্যের পেছনে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে। শুধু তাই নয়, রেলের ১৪টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছেন। এসব নেতা রেলের উর্ধতন পর্যায়ের তদন্ত কমিটির কাছ থেকে রেহাই পেলেও দুদকের তদন্তে এদের মুখোশ খুলে যাবে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগীরা।
আরও অভিযোগ রয়েছে, পূর্বাঞ্চলীয় সাবেক মহাব্যবস্থাপক নুরুল আমিন থাকাকালে শুধু বসুধা বিল্ডার্সের এ জায়গায় নয়, চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের পার্কিং সংলগ্ন এলাকাটিও তাঁর ভাইয়ের জন্য বেনামে বরাদ্দ দিয়েছেন। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে পাহাড়তলীর ভেলুয়ারদীঘির পারে ৫৩টি দোকান বরাদ্দের টেন্ডার আহ্বান করেও আবার স্থগিত করে দেন। স্থানীয় দখলে থাকা ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে টেন্ডার বাক্স খোলার দিনে তা স্থগিত করে দেয়। এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সাড়ে ৬শ’ সিডিউল ক্রেতার অর্থ ফেরত প্রদান করেনি কর্তৃপক্ষ। পাহাড়তলীর ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও সিআরবির চীফ এস্টেট অফিসারের দফতর থেকে এসব সিডিউল বিক্রি করা হয়েছিল। অপরদিকে ফৌজদারহাট স্টেশন সংলগ্ন প্রায় ১৮ হাজার বর্গফুটের একটি রেল ভূমি চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার হাবিবুর রহমানের যোগসাজশে ২০১১ সালে অবৈধভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও গত বছর পাহাড়তলী স্টেশন সংলগ্ন একমাত্র হ্যান্ডলিং স্পটটিও পূর্বাঞ্চলীয় ঐ কর্মকর্তা অবৈধভাবে বরাদ্দ দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.