স্মরণীয় ম্যাচ-অস্ট্রেলিয়াকে হারানো দুটো ইনিংস

চাপে বারবার ভেঙে পড়ে বলে 'চোকার' বদনামটা সেঁটে আছে দক্ষিণ আফ্রিকার গায়ে। কেপলার ওয়েসেলস, হানসি ক্রনিয়ে কিংবা শন পোলক_সবার দলই বয়ে বেড়িয়েছে এ বদনাম। গ্রায়েম স্মিথও পুরোপুরি কাটাতে পারেননি বদনামটা। তবে ২২ বছর বয়সে নেতৃত্ব পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। স্মিথের নেতৃত্বে খেলা ৮৪ টেস্টে সর্বোচ্চ ৩৯টি জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। ওয়ানডেতে ক্রনিয়ের দলের ৯৯ জয়ের পর


দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ জয় এসেছে তাঁর নেতৃত্বে। টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে এক নম্বরে পেঁৗছানোর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৪৩৪ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডও গড়েছিল স্মিথের দল। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে সেই ম্যাচে করা ৯০ রানের ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে আছে তাঁর ১৭৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে।
৪৩৪ রান তাড়া করে নতুন ইতিহাস গড়তে শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণ চালানোটা জরুরি ছিল। আর সেটাই করে গেছেন স্মিথ। ৫৫ বলে ১৩ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৯০ রানের ঝড়ো ইনিংসে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল প্রোটিয়াদের। সেই ছন্দটা ধরে রেখে হার্শেল গিবসের ১১১ বলে ১৭৫ ও মার্ক বাউচারের ৪৩ বলে অপরাজিত ৫০-এ ১ বল বাকি থাকতে ১ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৭৫ ওয়ানডেতে এ পর্যন্ত ৬৩৬০ রান করা স্মিথের ৮ সেঞ্চুরি থাকলেও তাঁর ক্যারিয়ারে অন্যতম স্মরণীয় ইনিংস হয়ে আছে এটা।
২০০৩ বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর পোলককে সরিয়ে নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয় স্মিথের কাঁধে। তখন বয়স মাত্র ২২ বছর। কম বয়সে অধিনায়ক হলেও এ দায়িত্ব চাপের পাহাড় হয়ে কুঁজো করে দেয়নি স্মিথকে। বরং অধিনায়ক হয়ে খেলা তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে পরপর দুটো ডাবল সেঞ্চুরি করেন তিনি। ২০০৩-এর জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বার্মিংহাম টেস্টের ২৭৭ তো তাঁর ক্যারিয়ারেরই সেরা। ইনিংসটি খেলেছিলেন ৫৪১ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩৭৩ বলে ৩৫ বাউন্ডারির সহায়তায়। স্মিথের সঙ্গে হার্শেল গিবসের (১৭৯) ৩৩৮ রানের ওপেনিং জুটিতে ৫ উইকেটে ৫৯৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪০৮ করায় আর একটা দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ড্র হয়ে যায় টেস্টটি। বার্মিংহামের পর লর্ডস টেস্টেও স্মিথ খেলেন ২৫৯ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ৫৭৪ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩৭০ বলে ৩৪ বাউন্ডারিতে খেলা ইনিংসটির ওপর ভর করে ইংল্যান্ডের ১৭৩ রানের জবাবে ৬ উইকেটে ৬৮২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৭ করলেও হেরে যায় ইনিংস ও ৯২ রানে। ১০ উইকেট নেওয়া মাখায়া এনটিনির সঙ্গে যৌথভাবে ম্যাচসেরা হন স্মিথ।
৯২ টেস্টে ৫০.২৯ গড়ে তাঁর রান ৭৫৯৫। শ্রদ্ধা করার মতোই অর্জন নিঃসন্দেহে। তবে এ বছর আর গত ৮ ইনিংসে কোনো টেস্ট সেঞ্চুরি না পাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন স্মিথ। সমালোচনার জবাবটা তিনি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম টেস্টে। কেপটাউনের 'ভুতুড়ে' সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ২৮৪ রানের জবাবে মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়াও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭ রানে অল আউট হলে জয়ের জন্য দরকার পড়ে ২৩৬ রানের। হাশিম আমলার সঙ্গে ১৯৫ রানের জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের জয় এনে দেন তিনিই। আমলা ১১২ করে ফিরলেও স্মিথ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৪০ বলে ১৫ বাউন্ডারিতে ১০১ রান করে। ক্রিকইনফো

No comments

Powered by Blogger.