মেঘের ওপর অভিমান ফেদেরারের

ম্যাচ শেষ হওয়ার পর কোর্টে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানোটা গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টগুলোর অলিখিত রেওয়াজ। কিন্তু পরশু রজার ফেদেরারের শরীর যেন টানছিলই না চেয়ার থেকে উঠে আবারও কোর্টে গিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়াতে। প্যারিসের মেঘলা আকাশেরও চেয়ে মুখ ভার। খানিক আগেই যে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফেদেরার ৩-৬, ৬-৩, ৭-৫, ৬-৪ গেমে হেরে বিদায় নিয়েছেন কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। ঘাতকের নাম? রবিন সোদারলিং। সেই সোদারলিং, গতবার এই ফ্রেঞ্চ ওপেনে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদালকে বিদায় করে দিয়েছিলেন যিনি!
কিন্তু পরাজয় যেন মেনে নিতে পারছিলেন না ফেদেরার। প্রথম সেটটাও দাপটের সঙ্গে জিতেছিলেন ৬-৩ গেমে। কিন্তু এর পর যে প্রকৃতিই শত্রু হয়ে দাঁড়াল তাঁর! লাল সুরকির কোর্টের এই মৌসুমে এ নিয়ে তিনবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে হারলেন ফেদেরার। মেঘদেবতার প্রতি অভিমানটা তাই লুকোনোর চেষ্টাই করলেন না, ‘সার্ভের সময় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার কম গতি পাচ্ছিলাম। তবে এ নিয়ে আসলে আমি অভিযোগ করতে পারি না। কারণ দুজনের বেলাতেই তো ঘটনা একই ছিল। কিন্তু আমি অবশ্যই হতাশ। কারণ এস্তরিল, রোম এবং এর পর এখানে—তিনটি ম্যাচই আমি হারলাম বৃষ্টিতে।’
গত ছয় বছরে এই প্রথম কোনো গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেন রেকর্ড ১৬টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ফেদেরার। টানা ২৩টি গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠার রেকর্ডটাও তাই থেমে গেল এখানেই। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যায়ে তাঁর সর্বশেষ পরাজয়টি ছিল ২০০৪ সালে, ফ্রেঞ্চ ওপেনেই। রোঁলা গাঁরো অবশ্য বরাবরই তাঁর জন্য এক আক্ষেপের নাম হয়ে ছিল। অবশেষে গতবার বহু আরাধ্যের শিরোপাটি জিতেছিলেন ফেদেরার, নাদাল ছিলেন না বলেই হয়তো। ফাইনালে নাদালের পরিবর্তে ছিলেন সোদারলিং। সেই ফাইনালে তো বটেই, পরশুর আগ পর্যন্ত ফেদেরারের বিপক্ষে ১২টি ম্যাচ খেলে সব কটিই হেরেছেন এই সুইড।
অপয়া তেরোকে সৌভাগ্য বানিয়ে এবার জিতলেন সোদারলিং। কিন্তু পরপর দুই বছর দুই-এক নম্বর তারকাকে বধ করেই সন্তুষ্ট নন তিনি। এবার শিরোপা জিতেই স্মরণীয় করে রাখতে চান লাল দুর্গে তাঁর এই কীর্তি। পরশু সেটাই বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী, ‘এটা অনেক বড় জয়, তবে এটা কিন্তু ফাইনাল নয়।’

No comments

Powered by Blogger.