শিশুমৃত্যুর হার অর্ধেকে নামল -সাফল্যের অর্ধেকের বাইরের অর্ধেকটা কিন্তু ব্যর্থতাই

বাংলাদেশে বেশির ভাগ শিশুই জন্মে মৃত্যুর ঝুঁকি সঙ্গী করে। আশার কথা, বাংলাদেশ সেই ঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে আনতে পেরেছে। গত সোমবার প্রকাশিত প্রথম আলোর একটি সংবাদ জানাচ্ছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত শিশুমৃত্যুর হার অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের ‘বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনের বিশেষ সংস্করণে এ তথ্য জানানো হয়।
এর থেকে আনন্দের সংবাদ আর কী হতে পারে যে, সম্ভাব্য মৃত্যুর হাত থেকে অর্ধেক শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। এর থেকে দুঃখেরই বা কী হতে পারে, উপযুক্ত সেবা ও চিকিত্সাসহায়তা না পাওয়ায় দুগ্ধপোষ্য অনেক শিশুই বাঁচতে পারছে না। সম্প্রতি একটি জরিপভিত্তিক গবেষণার ফল জানিয়েছে, জন্মের দুই দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে শিশুমৃত্যুর হার ৩ ভাগের ২ ভাগই কমিয়ে আনা সম্ভব। কেবল স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শেই বিপুলসংখ্যক নবজাতকের জীবন রক্ষা হতে পারে। এটুকু মামুলি সহযোগিতাও অনেক ক্ষেত্রে না মেলা দুর্ভাগ্যজনক। জীবন ও মৃত্যুর ব্যবধান যেখানে এত ক্ষীণ, সেখানে শিশুমৃত্যুর হার অর্ধেকে নামিয়ে আনাকে অভিনন্দন জানাতেই হয়। একই সঙ্গে আরও অধিকসংখ্যক নবজাতকের মৃত্যু মনে করিয়ে দেয়, করার রয়েছে অনেক কিছু।
ওই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৯৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মোট পাঁচটি জরিপে দেখা গেছে, এক বছর থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা গেছে ১০ শতাংশ, এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত এ হার কমেছে ৬ শতাংশ, কিন্তু নবজাতকদের বেলায় কমতির হার মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা গতিশীল থাকলে আরও অনেক প্রাণ বেঁচে যেত। সুতরাং কোথায় বেশি জোর দিতে হবে, তা আর অজানা থাকার কথা নয়।
কেবল স্বাস্থ্যসেবার মধ্যেই তা সীমিত থাকতে পারে না। শিশুর বেড়ে ওঠার সুস্থ ও আনন্দদায়ক পরিবেশ এবং শিক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে সরকারকেই।

No comments

Powered by Blogger.