পাকিস্তান দলে আবারও বাজির থাবা

এ কী বোমা ফাটালেন আবদুল কাদির! পাকিস্তানের ক্রিকেটে আবার ভর করেছে ম্যাচ পাতানোর ভূত? সাবেক এই লেগ স্পিনার ও প্রধান নির্বাচকের ঘোর সন্দেহ, শ্রীলঙ্কা সফরে পাকিস্তানের কয়েকজন ক্রিকেটার ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত। ০-২ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারের পর প্রথম তিন ম্যাচেই ওয়ানডে সিরিজের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়াটাকে শ্রীলঙ্কার মাটিতে পাকিস্তানের খুবই বাজে পারফরম্যান্স উল্লেখ করে কাদির উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে সত্য বের করে আনার দাবি জানিয়েছেন।
ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের কিছু ক্রিকেটারের আচরণ ‘অদ্ভুত’ ঠেকছে কাদিরের কাছে। পাকিস্তানের একটি দৈনিককে তিনি বলেছেন, ‘যে দলটা মাত্র পাঁচ সপ্তাহ আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল, তারাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সব ম্যাচে হারবে, এত বাজে খেলবে—এটা আমি মানতে পারছি না। শ্রীলঙ্কায় আমাদের সবচেয়ে বাজে সফরগুলোর মধ্যে পড়বে এটা।’ কাদিরের ধারণা কিছু ক্রিকেটার ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত বলেই এই ব্যর্থতা, ‘সিরিজটা দেখে আমার সন্দেহ হচ্ছে, কিছু খেলোয়াড় হয়তো ম্যাচ পাতানোয় জড়িত থাকতে পারে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করলেই সবকিছু স্ফটিকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা, কাদিরও মানেন। কিন্তু মাত্র কিছুদিন আগে বিশ্বকাপ জেতা একটা দল এভাবে ম্যাচের পর ম্যাচ হারতে থাকবে, এটা মানতে পারছেন না সাবেক এই লেগি, ‘বিস্ময়করভাবে আমরা সব ম্যাচ হেরে যাচ্ছি। বোলিং যখন ভালো হয়, ব্যাটসম্যানরা পারফর্ম করতে পারে না। আবার যখন ব্যাটসম্যানরা পারফর্ম করে তখন বোলাররা ভালো খেলে না। কোথাও না কোথাও সমস্যা আছেই।’
সাবেক অধিনায়ক ও উইকেটকিপার রশিদ লতিফ অবশ্য কাদিরের মতো কোনো অভিযোগ তুলছেন না। তবে তিনি মনে করেন, কলম্বোর টিম হোটেলে সন্দেহভাজন এক ভারতীয়র উপস্থিতির ঘটনা ফাঁস করে দেওয়াটা ঠিক হয়নি, ‘এ রকম কিছু ঘটে থাকলেও সেটা টেস্ট সিরিজে হারের পর মিডিয়ার কাছে প্রকাশ করতে হবে কেন? এর কোনো অর্থই হয় না। টিম ম্যানেজমেন্ট আর বোর্ডের উচিৎ ছিল বিষয়টি নিয়ে গোপনে কাজ করা এবং ক্রিকেটারদের খেলায় মনোযোগী রাখা।’ এর আগে পাকিস্তানের একটি উর্দু দৈনিকে টেস্ট সিরিজ চলার সময় টিম হোটেলে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সন্দেহজনক কিছু লোকের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার খবর বেরিয়েছিল।
ওদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) থেকে জানানো হয়েছে, আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তাবিষয়ক ইউনিট কলম্বোয় বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। পিসিবির চিফ অপারেটিং অফিসার সেলিম আলতাফ বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন ইউনিট সঠিক পথই অনুসরণ করছে। সন্দেহজনক কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা খুব ভালোভাবে তদন্ত করবে তারা। আমাদের মনে হয় না খুব দ্রুতই তারা এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারবে।’ পিসিবি থেকে তদন্তকাজে সাহায্য করার জন্যও বলা হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।

No comments

Powered by Blogger.