দলের নীতিমালায় বহাল থাকছে ‘সশস্ত্র সংগ্রাম’

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ দলের প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয়েছে। গত ২০ বছরের মধ্যে দলটির এটা প্রথম সম্মেলন। অভ্যন্তরীণ দ্বিধাবিভক্তি রোধ এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নিজেদের অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার তিন দিনের এ সম্মেলন শুরু হয়। ফিলিস্তিনের মাটিতে ফাতাহর এটাই প্রথম সম্মেলন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্রতত্ত্ব মেনে নিলেও দলটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সশস্ত্র সংগ্রাম’-এর মূলনীতি বহাল রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিন দিনের এ প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে পশ্চিম তীরের বেথেলহেম শহরে। ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত ১৯৫০ সালে ফাতাহ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো দলটির প্রতিনিধি সম্মেলন হচ্ছে।
সম্মেলনে দলের জন্য নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতৃত্বে রদবদল করা হবে। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন এক হাজার ৯০০ প্রতিনিধি। তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিপ্লবী পরিষদ নবায়ন করবেন। দলের মূল গভর্নিং বডি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছে। দলের নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মের নেতারা অগ্রাধিকার পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফাতাহ কর্মকর্তারা জানান, নতুন কর্মসূচির খসড়ায় ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ ও পশ্চিম তীরে বেড়া নির্মাণের বিরুদ্ধে অসহযোগের মতো আন্দোলনের ডাক দেওয়ার কথা রয়েছে। শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের পথও খোলা রাখা হয়েছে ওই খসড়ায়।
২০০৬ সালে আইনসভার নির্বাচনে ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হামাসের কাছে বিস্ময়করভাবে হেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর একক কর্তৃত্ব ছিল ফাতাহর। ২০০৭ সালে ফাতাহকে গাজা থেকে উচ্ছেদ করে হামাস।
গত কয়েক বছরে ইসরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার অঙ্গীকার থেকে সরে আসে ফাতাহ। তবে শান্তি প্রচেষ্টা থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ফলাফল বেরিয়ে না আসায় আস্থার সংকটে পড়ে দলটি।
সম্মেলনে ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আবারও অস্বীকৃতি জানাবে ফাতাহ। জেরুজালেম ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতেও অস্বীকৃতি জানাবে দলটি।
সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দেন ফাতাহ প্রধান মাহমুদ আব্বাস। তিনিই যে দলটির নেতৃত্বে থাকছেন সেটা নিশ্চিত।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দলটিকে বেশ দুর্বল করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে। ফাতাহর মহাসচিব ফারুক কাদ্দুমি জনসম্মুখে মাহমুদ আব্বাসের সমালোচনা করেন। পশ্চিম তীরে প্রতিনিধি পরিষদের সম্মেলন আয়োজনেরও বিরোধিতা করেন তিনি।
সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ফাতাহর প্রায় ৪০০ জন প্রতিনিধিকে গাজা থেকে পশ্চিম তীরে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি হামাস। অন্যদিকে বিদেশে অবস্থানরত ফাতাহর প্রায় ৫০০ প্রতিনিধিকে সম্মেলনে যোগ দিতে অনুমতি দেওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে ইসরায়েল।

No comments

Powered by Blogger.