আলোচনায় নিউইয়র্কের ভাবি ফার্স্টলেডি
তার তৈরি একটি চিত্রে দেখা যায়, মার্কিন ডলারের গুচ্ছের ওপর লেখা রয়েছে- ইসরাইল যুদ্ধাপরাধী। এই অ্যানিমেশনটি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে নিজেই পোস্ট করেন জোহরান মামদানি। সঙ্গে লিখেছিলেন, প্রতি বছর নিউইয়র্কের দাতব্য সংস্থাগুলো ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধে অর্থায়নের জন্য ৬০ মিলিয়ন ডলার পাঠায়। এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এখন সময় এসেছে এর অবসান ঘটানোর। আরও আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে দুয়াজি শেয়ার করেন একটি অঙ্কনচিত্র। তাতে দেখা যায়, এক ফিলিস্তিনি পরিবার তাদের জমিতে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে এক ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। এর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, প্রেসিডেন্টরা আসে আর যায়, কিন্তু আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ কখনও বদলায় না। ভাবছি ফিলিস্তিনিদের কথা- যাদের কষ্টের শেষ নেই, কে ক্ষমতায় আছে তা নির্বিশেষে।
সম্প্রতি আরও বিতর্ক ওঠে, যখন তিনি ফিলিস্তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সালেহ আল-জাফারাওয়ির ছবিতে চারটি ভাঙা হৃদয়ের ইমোজি পোস্ট করেন। ২৮ বছর বয়সী আল-জাফারাওয়ি গত মাসে হামাসবিরোধী এক মিলিশিয়ার হাতে নিহত হন। এ হামলাকারীরা ইসরাইল থেকে অস্ত্র পেয়েছে বলে বলা হয়। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন মামদানি। ফলে ওইদিন দুবাইয়ে বেড়ে ওঠা, হিউস্টনে জন্ম নেওয়া এবং নিজেকে সিরীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া রামা দুয়াজি হবেন নিউইয়র্কের ফার্স্ট লেডি। মঙ্গলবার ব্রুকলিনের প্যারামাউন্ট থিয়েটারে তিনি স্বামীর সঙ্গে মঞ্চে ওঠেন। কালো লেস পোশাক ছিল পরণে। চপচপে ফ্রিঞ্জসহ অড্রে হেপবার্ন-প্রেরণায় সাজানো চুল ও গাঢ় নখের রঙে তিনি দর্শকদের উদ্দেশে নিখুঁতভাবে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। ইনস্টাগ্রামে তার অনুসারীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। ভক্তরা মুগ্ধ তার গম্ভীর অথচ আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতিতে।
রামা ও মামদানির প্রেমের গল্প শুরু হয় ২০২১ সালে ডেটিং অ্যাপ ‘হিঙ্গ’-এর মাধ্যমে। সে সময় দুয়াজির বয়স ছিল ২৪, আর মামদানি তখন ২৯। রাজনীতিতে তখন উদীয়মান তারকা মামদানি। এক সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, যারা ভালোবাসা খুঁজছেন, তারা যেন অনলাইন ডেটিং অ্যাপগুলোকে একেবারে বাদ না দেন। আমি আমার স্ত্রীকে হিঙ্গে পেয়েছি। তাই এখনো আশার জায়গা আছে!
তারা গত বছরের অক্টোবরে এনগেজমেন্ট ঘোষণা করেন এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্ক সিটির ঐতিহাসিক সিটি হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দুবাইয়ে একটি জাঁকজমকপূর্ণ বাগদান ও ইসলামী নিকাহ অনুষ্ঠানও হয়। রামা দুয়াজি ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি স্কুল অব দ্য আর্টস থেকে স্নাতক। সেখানে তিনি দোহা (কাতার) ও রিচমন্ড (ভার্জিনিয়া)- দুই শহরেই পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষে তিনি দুবাইয়ে ফিরে যান এবং ২০২১ সালে নিউইয়র্কে চলে আসেন। ঠিক কয়েক মাস পরই ভাগ্যে মিলে যায় ভবিষ্যৎ স্বামীর সঙ্গে।

No comments