৩ দশক পর যুক্তরাষ্ট্রে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে ৩০ বছরের বেশি সময় পর আবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার দাবি, রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। দক্ষিণ কোরিয়ায় শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, অন্যান্য দেশের পরীক্ষার কর্মসূচির কারণে আমি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রও সমানভাবে পরীক্ষা শুরু করতে। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে এবং চীন অনেক পিছিয়ে তৃতীয়। ১৯৯২ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায়নি। এর কয়েক দিন আগেই ট্রাম্প রাশিয়াকে সমালোচনা করেন একটি পারমাণবিকচালিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য, যার পরিসীমা অসীম বলে জানা গেছে।

বুধবার রাতের পোস্টে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহ বিধ্বংসী ক্ষমতা স্বীকার করে বলেন, তার কোনো বিকল্প ছিল না। প্রথম দফা দায়িত্বে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভাণ্ডারকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার কাজ শুরু করতে হয়েছিল। তিনি আরও লিখেছেন, চীনের পারমাণবিক কর্মসূচি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হতে পারে। ট্রাম্পের পোস্টে পরীক্ষার পদ্ধতি বা স্থান সম্পর্কে কোনো বিশদ তথ্য ছিল না। তবে তিনি জানান প্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে। এটি দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতির একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করছে। ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা চালায়। সেটা শীতল যুদ্ধের অবসানের পর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশের জারি করা স্থগিতাদেশের আগে।

ট্রাম্পের পোস্টটি প্রকাশিত হয় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণের ঠিক আগে। এটি ছিল ২০১৯ সালের পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। পোস্টটি ট্রাম্প লিখেছিলেন মারিন ওয়ান হেলিকপ্টারে চড়ে গিমহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পথে যাওয়ার সময়। ১৯৯২ সালের যে শেষ পরীক্ষাটি করা হয়েছিল, তার কোডনাম ছিল ‘ডিভাইডার’, যা যুক্তরাষ্ট্রের ১০৫৪তম পারমাণবিক পরীক্ষা বলে জানায় লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি। তারা বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরিতে মূল ভূমিকা রেখেছিল। নেভাডা টেস্ট সাইট, যা লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১০৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এখনও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে রয়েছে। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড হিস্ট্রি-এর তথ্যানুসারে, প্রয়োজন মনে হলে ওই স্থান আবারও পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত হতে পারে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.