ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের সম্মতির পরও ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করলো ইসরাইল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে হামাস সম্মতি দিলেও ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন বন্ধ হয়নি। শুক্রবার পর থেকে এ পর্যন্ত ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদাররা। এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই। এতে বলা হয়েছে, সপ্তাহান্তে গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক এলাকা, শরণার্থী শিবির ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও রয়েছে।  গাজা সিটির বাসিন্দারা আল জালা ও অন্য এলাকার বাড়িগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথাও জানিয়েছেন। গাজা ভিত্তিক সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, শনি ও রোববারে কমপক্ষে ৯৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার আরও সাতজনকে হত্যা করেছে দখলদাররা। ইসরাইলি বাহিনী সপ্তাহান্তে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। সোমবার গ্রিক অর্থোডক্স স্কুলে হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে। এছাড়া খান ইউনিসে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রেও হামলা চালানো হয়েছে। একই দিনে অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০ জনে।
গাজার সমর্থনে নেদারল্যান্ডে আড়াই লাখ মানুষের বিক্ষোভ
ইসরাইল ইস্যুতে কঠোর হওয়ার জন্য ডাচ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জনতা। এ জন্য রোববার আমস্টারডামে কমপক্ষে আড়াই লাখ মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। তারা গাজায় গণহত্যার সঙ্গে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডাচ নিউজ। তারা বলেন, ডাচ সরকার পদক্ষেপ না নেয়ার মধ্য দিয়ে ‘রেড লাইন’ বা চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এ জন্য বিক্ষোভকারীরা এদিন লাল পোশাক পরে অংশ নেন। মিউজিয়ামপ্লেইন এবং এর আশপাশের এলাকা বিক্ষোভকারীতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা ও প্লাকার্ড। বিক্ষোভ শুরুর কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা পরে তারা মিউজিয়ামপ্লেইন ত্যাগ করেন। সেখান থেকে ভন্ডেলপার্কগামী সড়ক ধরে বিক্ষোভ অগ্রসর হতে থাকে। বিক্ষোভকারী ডেবোরা ডাচ নিউজকে বলেন, মনে করি না যে এককভাবে আমি কোনো কিছু করতে পারবো। কিন্তু যখন সবাই একত্রিত হন, বিশাল একটি গ্রুপে পরিণত হয়। তখন বিশ্ব দেখতে পায় বহু মানুষ আসলেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। অনেক পরিবারের সদস্যরা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে যোগ দেন বিক্ষোভে। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের ছোট ছোট পতাকা। তারা লাল স্কার্ফ ও রেইনকোট পরিহিত প্রবীণ দম্পতিদের পাশাপাশি হেঁটে যেতে থাকে। তরুণ বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বাসায় তৈরি প্লাকার্ড। তাতে লেখা- ‘নো পিস উইদাউট জাস্টিস’। অর্থাৎ ন্যায়বিচার ছাড়া কোনোদিন শান্তি আসে না।
বিক্ষোভের সময় ভবনগুলোর মধ্যে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ধ্বনি প্রতিধ্বনি তোলে। ব্যস্ত মার্কেটগুলো থেকে জনতা জানালায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দর্শন করে। একজন তরুণের টি-শার্টে লেখা ছিল- ‘১৬,৩৮২ জন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে’। একজন বালিকা একটি কালো প্লাকার্ড বহন করছিল। তাতে লেখা- আপনার নীরবতাই হলো সহিংসতা, নিজেকে শিক্ষিত করে তুলুন। অন্য এক বিক্ষোভকারী বলেন, ইসরাইলে বড় মাত্রায় বিনিয়োগকারী নেদারল্যান্ডস। তাদের কাছে আমরা একটি বার্তা পাঠাতে পারি যে, আসলেই এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্প্রচার মাধ্যম এনওএসের মতে, এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন ইহুদি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি গ্রুপ।
তারা এর মধ্য দিয়ে এটাই বুঝাতে চান যে, ইসরাইলি নীতি পুরো ইহুদি সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। ডাচ রেল অপারেটর এনএস বলেছে, আমস্টারডামে আগত মানুষের চলাচল ঠিক করতে তাদেরকে ট্রেনে বগি বাড়াতে হয়েছে। সেখানে মেট্রো সার্ভিসও বাড়ানো হয়। তবে ট্রাম সার্ভিস ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। উল্লেখ্য, এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ আয়োজন করে কমপক্ষে ১৩০টি গ্রুপ। এর মধ্যে আছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অক্সফাম নোভিব, প্যাক্ট এবং দ্য রাইটস ফোরাম।
https://mzamin.com/uploads/news/main/183422_Lima-5.webp

No comments

Powered by Blogger.