হামাস-ইসরাইল শান্তি আলোচনা আজ, ট্রাম্পের তাগাদা
ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, এ পর্যন্ত আলোচনা খুব সফল হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে প্রথম ধাপ এই সপ্তাহেই সম্পন্ন হবে এবং আমি সবাইকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সময় এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ- নইলে ভয়াবহ রক্তপাত ঘটবে। এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন খুব শিগগিরই জিম্মিদের মুক্ত করা শুরু হবে। নিজের প্রস্তাবে নমনীয়তা থাকবে কি না- এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, নমনীয়তার প্রয়োজন নেই। কারণ সবাই মূলত একমত হয়েছে। তবে কিছু পরিবর্তন অবশ্যই আসবে। তিনি বলেন, এটি ইসরাইলের জন্য দারুণ একটি চুক্তি। একইসাথে পুরো আরব ও মুসলিম বিশ্বের জন্যও। আমরা এ নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। এদিকে, হামাসের প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার পরও গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার ইসরাইলকে ‘অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে’ নির্দেশ দেন ট্রাম্প।
তা সত্ত্বেও তারা অব্যাহতভাবে বোমা হামলা করে গাজাবাসীকে হত্যা করছে। ইসরাইলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদরোশিয়ান রোববার বলেন, গাজার ভেতরে কিছু বোমাবর্ষণ বন্ধ হলেও এখনো কোনো যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নির্দেশ দিয়েছেন ‘যদি আত্মরক্ষার প্রয়োজন হয়, সেনারা প্রতিরোধমূলক হামলা চালাবে।’
গাজা থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান ও ট্যাংকের গোলাবর্ষণে শনিবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত গাজার বহু আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদক রোববার ইসরাইল সীমান্তের কিবুত্ৎস বেয়েরির কাছে অবস্থানকালে গাজা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখেছেন। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৬৫ জন নিহত হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সিবিএস নিউজকে বলেন, জিম্মিদের মুক্তি ঘটাতে হলে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে। বোমা পড়ার মধ্যে মুক্তি সম্ভব নয়। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব জিম্মিদের মুক্ত করা হোক। ২০ দফা পরিকল্পনায় যুদ্ধবিরতি ও ৪৮ জন জিম্মির মুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ২০ জনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা আছে। তাদের মুক্তির বিনিময়ে শত শত আটক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে। শনিবার টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দিতে পারব।
সরকারি মুখপাত্র বেদরোশিয়ান আরও জানান, নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এই আলোচনার মেয়াদ কয়েক দিনের মধ্যেই সীমিত থাকবে। নেতানিয়াহু সোমবার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য ইসরাইলি প্রতিনিধি দলকে মিশরে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, হামাসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে আছেন প্রধান আলোচক খালিল আল-হাইয়া। তিনি রোববার রাতে কায়রো পৌঁছেছেন। গত মাসে দোহায় ইসরাইলি হত্যাচেষ্টার টার্গেট ছিলেন তিনিও। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল-থানি উপস্থিত থাকবেন বলে বলা হয়েছে।

No comments