ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ায় নিউজিল্যান্ডে হতাশা

নিউজিল্যান্ড সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেয়ার সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধী দল, ফিলিস্তিনি সংগঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাদের মতে, এ সিদ্ধান্ত নিউজিল্যান্ডকে ইতিহাসের ভুল পাশে দাঁড় করিয়েছে এবং দেশের ঐতিহ্যবাহী মিত্রদের সঙ্গেও বৈপরীত্য সৃষ্টি করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।

এতে আরও বলা হয়, গত সপ্তাহে বৃটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশ নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বিশেষ সম্মেলনের আগে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ মাস পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৫৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, নিউজিল্যান্ডের জোট সরকারও একই পদক্ষেপ নেবে, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন ও অন্যান্য মন্ত্রীর পূর্ববর্তী মন্তব্যের আলোকে।

কারণ তারা বলেছিলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়া হবে ‘কবে দেয়া হবে, সেটা প্রশ্ন, দেয়া হবে কি না- সেটা নয়।’ কিন্তু শনিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স জানান, যদিও নিউজিল্যান্ড দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে এখনই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে না। তিনি বলেন, যুদ্ধ চলমান অবস্থায়, হামাস যখন গাজার কার্যত শাসক, আর ভবিষ্যতের কোনো ধাপ পরিষ্কার নয়- তখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

তাই এখনই নিউজিল্যান্ডের পক্ষে স্বীকৃতি ঘোষণা করা যুক্তিযুক্ত হবে না। পিটার্স আরও দাবি করেন, স্বীকৃতি দেয়ার ফলে যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত অনেক নিউজিল্যান্ডারের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছেন। সোমবার অকল্যান্ডে অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রীর অফিসের সামনে অ্যাংলিকান ও ক্যাথলিক ধর্মযাজকরা নিজেদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক বলেন, নিউজিল্যান্ড নিজেকে ‘ইতিহাসের ভুল পাশে’ দাঁড় করিয়েছে।

তিনি আরএনজেড’কে বলেন, যত বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে একটি সমাধানের পথে এগোনোর অংশ হিসেবে, নিউজিল্যান্ড ততটাই পিছিয়ে পড়ছে এবং এর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতির ঘোষণাগুলো এসেছে এমন সময়ে, যখন ইসরাইল গাজা শহরে হামলা তীব্র করেছে এবং আশঙ্কা তৈরি হয়েছে স্বীকৃতির প্রতিশোধ হিসেবে পশ্চিম তীর দখল করতে পারে তারা। এর আগে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান কমিশন জানিয়েছে, ইসরাইল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.