নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি

ওদিকে সুসিলা কারকির স্বামী ১৯৭৩ সালে এক বিমান ছিনতাইয়ে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে। ওদিকে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, নেপালের রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত শপথ অনুষ্ঠানটিই দিন কয়েকের জল্পনা-কল্পনা ও নেপথ্যের সমঝোতার ইতি টেনে দিল, আর এর মধ্য দিয়েই দেশ প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রধানমন্ত্রী পেল। শপথ নেওয়ার পরই ঘোষণা করা হয় যে সাধারণ নির্বাচন হবে ৫ই মার্চ ২০২৬। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল ও প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট রাম সহায় যাদব এবং প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাওয়াত। ভারতের নেপালস্থ রাষ্ট্রদূত নবীন শ্রীবাস্তব’ও নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় যে এই সিদ্ধান্ত এসেছে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল, নেপাল সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল এবং জেনারেশন জেড আন্দোলনের প্রতিনিধিদের মধ্যে ঐকমত্যের মাধ্যমে। এই আন্দোলনের চাপেই গত সপ্তাহে পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। এই ঘটনাবলির সূত্রপাত হয় কয়েকদিনের ব্যাপক বিক্ষোভ থেকে, যেখানে দুর্নীতি ও বেকারত্বে ক্ষুব্ধ তরুণ নেপালিরা নেতৃত্ব দেয়। পুলিশি দমনপীড়নে কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হন এবং এর ফলেই অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। যদিও সুশীলা কারকির নাম কয়েকদিন ধরেই ঐকমত্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় ছিল, তিনি একমাত্র সম্ভাব্য মুখ ছিলেন না। এক পর্যায়ে প্রতিবাদকারীদের মধ্যেই বিভাজন দেখা দেয়- কিছু অংশ সমর্থন দেয় প্রকৌশলী কুলমান ঘিসিংকে, যিনি নেপালের বিদ্যুতের ঘাটতি কাটিয়ে তোলার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরেকটি নাম ছিল বালেন্দ্র শাহ। তিনি ‘বলেন’ নামেই বেশি পরিচিত ৩৫ বছর বয়সী কাঠমান্ডুর মেয়র, র্যাপার ও রাজনীতিক। শহুরে তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা দ্রুত বেড়েছে। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সুশীলা কারকিকে তরুণ প্রজন্ম অনেকটা আপসহীন চরিত্র হিসেবেই দেখে। বিচারকালে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য সুনাম অর্জন করেন। তবে তার বিচারিক ক্যারিয়ার ঝড়ঝাপটাহীন ছিল না। দায়িত্ব নেয়ার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করা হয়। শেষ পর্যন্ত জনমতের চাপে সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। তবে এই ঘটনার পর কারকি হতাশ হয়ে পড়েন এবং অবশেষে পদত্যাগ করেন।

No comments