পাকিস্তান-সৌদি আরব চুক্তি মুসলিমদের যৌথ ‘সুপারপাওয়ার’: সানাউল্লাহ
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আরও জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সবসময় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান সবসময় স্পষ্ট। আমরা কখনো আগ্রাসন শুরু করি না। যদি ভারত আক্রমণ করে, আমরা জবাব দেব। এ কথা উল্লেখ করে অতীতের সংঘাতে পাকিস্তানের শক্ত প্রতিক্রিয়ার কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের অবস্থান সবসময় প্রতিরক্ষামূলক ছিল।
সানাউল্লাহ ইঙ্গিত দেন যে, এই চুক্তি ন্যাটোর বাইরে নজিরবিহীন এবং এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও কোনো আপত্তি থাকবে না। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি পাকিস্তানের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে। কারণ অন্যান্য দেশ এখন ক্রমবর্ধমানভাবে প্রতিরক্ষায় পাকিস্তানের সহায়তা চাইছে। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, কাশ্মীর সমস্যা সমাধান এখন ভারতের জন্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বকে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার এবং নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানান।
এর একদিন আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাষ্ট্রদূত শফকত আলী খান পরিষ্কার করেন যে, পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক এবং কোনো তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে নয়। শুক্রবার সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিং-এ খান বলেন, উভয় দেশের নেতৃত্ব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রিয়াদ ও ইসলামাবাদ ১৭ই সেপ্টেম্বর এই পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করেছে, কাতারে ইসরাইলের হামলার এক সপ্তাহ পর যা অঞ্চলের কূটনৈতিক হিসাব-নিকাশকে ওলটপালট করে দেয়।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, চুক্তিতে বলা হয়েছে, কোনো একটি দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন মানে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামের পবিত্রতম স্থানের ভূমি সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের কয়েক দশকের পুরনো জোট যৌথ বিশ্বাস, কৌশলগত স্বার্থ ও অর্থনৈতিক পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র যোগ করেন যে, সফর চলাকালে আনুষ্ঠানিক পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও সৌদি আরব ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার একটি অনন্য বন্ধনে আবদ্ধ, এবং পাকিস্তানি জনগণ দুই পবিত্র মসজিদের ভূমির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করে।
তিনি আরও জানান, ১৯৬০-এর দশক থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দুই দেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হিসেবে রয়েছে এবং দুই নেতা এই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, উভয় পক্ষ তাদের ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে মতবিনিময় করেছে।
তার মতে, এই চুক্তি দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও যৌথ নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, চুক্তির আওতায় এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অন্য দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি কয়েক দশকের দৃঢ় অংশীদারিত্বকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে, যা আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

No comments