টিউলিপের আশঙ্কা দোষী সাব্যস্ত করতে ‘ভুয়া’ নথি ব্যবহার হতে পারে
বৃটেনে তদন্ত ও পদত্যাগ: এ বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের স্বাধীন উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদ নীতিসংহিতা বিষয়ে তদন্ত করে তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে। তবে উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, টিউলিপ যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না সম্ভাব্য সুনামহানির ঝুঁকি সম্পর্কে। টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগগুলোকে সরকারে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী দাবি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।
ভুয়া নথি নিয়ে বিতর্ক: সম্প্রতি প্রকাশিত জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্যে বলা হয়েছে, এগুলো টিউলিপের আগের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি আগে বলেছিলেন, তার কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এবং তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রায় ২৫ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ। সিদ্দিক আবারও দাবি করেন, তার বক্তব্য সত্য। তিনি বলেন, এসব জাল কাগজপত্রই নতুন ভুয়া প্রচারণার সূচনা হতে পারে। তবে তিনি কখনো অস্বীকার করেননি যে তিনি বাংলাদেশি নাগরিক, পাশাপাশি বৃটিশ নাগরিকও। মন্ত্রী হওয়ার সময় তিনি ট্রেজারিকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন। দ্য গার্ডিয়ান তার ট্রেজারিকে দেয়া ঘোষণার কপি দেখেছে। লন্ডনে জন্ম নেওয়া টিউলিপ সিদ্দিক বাবা-মা উভয়ের বাংলাদেশে জন্মের কারণে বাংলাদেশি নাগরিকত্বও পান। শৈশবে তিনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পান। তবে ১৮ বছর বয়সের পর সেটি নবায়ন করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে দাবি করা হচ্ছে, তিনি ২০০১ সালে লন্ডন থেকে নতুন পাসপোর্ট নেন এবং ২০১১ সালে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে নবায়নের আবেদন করেন। একই সঙ্গে তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নম্বর রয়েছে। সিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
পুরোনো সাক্ষাৎকার নিয়ে বিতর্ক: ২০১৭ সালে চ্যানেল ৪-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারও এখন তার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি বাংলাদেশি আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেমের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে হস্তক্ষেপ করবেন? সিদ্দিক উত্তরে বলেন, আপনি জানেন আমি একজন বৃটিশ এমপি? আমি লন্ডনে জন্মেছি। আপনি কি ইঙ্গিত দিচ্ছেন আমি একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ? কারণ এটি বলা সঠিক নয়। আমি বৃটিশ, আমি হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন থেকে নির্বাচিত এমপি। তিনি এখন বলছেন, তার কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আসলে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে তিনি বৃটিশ এমপি হিসেবে বাংলাদেশি মামলায় হস্তক্ষেপ করবেন না।
আইনি সহায়তা না পাওয়া: সিদ্দিক অভিযোগ করেন, ঢাকার আদালতে তাকে কোনো আইনি প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন দাবি করেছে, তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় উল্লিখিত ঠিকানায় সমন পাঠানো হয়। কিন্তু সিদ্দিক বলেছেন, তিনি ওই ঠিকানায় কখনোই থাকেননি এবং এগুলো ‘ভুয়া নথি’তেই লেখা।

No comments