ইসরায়েলের হামলা ও হুমকির মুখে গাজা নগরী ছাড়ছেন ফিলিস্তিনিরা
গাজায় ২৩ মাস ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে আগস্ট থেকে গাজা নগরী দখলের অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকেই শহর এলাকাটি এবং এর আশপাশে তীব্র হামলা চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে গত গতকাল শনিবার নতুন করে নগরীর বাসিন্দাদের দক্ষিণে আল–মাওয়াসি এলাকায় সরে যেতে বলা হয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, আগামী দিনগুলোতে সেখানে হামলা বাড়বে।
ইসরায়েলের নৃশংস হামলার মুখে যদিও আগে থেকেই গাজা নগরী ছাড়ছেন বাসিন্দারা। শনিবারই প্রাইভেট কার ও গাধায় টানা গাড়িতে করে জিনিসপত্র নিয়ে অনেককে দক্ষিণের দিকে যেতে দেখা যায়। অনেকে যাচ্ছেন হেঁটে। নগরীর শেখ রাদওয়ান এলাকার বাসিন্দা আবু মোহাম্মদ আল–দাউদি বলেন, পালানো অথবা মারা যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। ইসরায়েলি বাহিনী কাউকেই ছাড়ছে না।
উম রামি নামের এক নারীও তাঁর চর শিশু সন্তানকে নিয়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পাশেই তাঁর স্বামী গাধায় টানা গাড়িতে মালামাল তুলছিলেন। গত শুক্রবার গাজা নগরীতে বহুতল ভবন মুশতাহা টাওয়ার ধ্বংসের কথা স্মরণ করেন তিনি। উম রামি বলেন, ‘ভয় পাচ্ছি, গাজার অন্য টাওয়ারগুলোরও একই পরিণতি হবে। দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যাচ্ছি, তবে জানি না সেখানে কী হবে।’
গাজা নগরীর বহুতল ভবনগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলে সেখানে বসবাস করা প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনির ‘ব্যাপক হারে বাস্তুচ্যুত হাওয়ার বিপর্যয়ের’ ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন বলে জানান উপত্যকার জনসংযোগ কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আল–থাওয়াবতা। তিনি বলেন, গাজা নগরীতে ৫১ হাজারের বেশি বহুতল ভবন বা টাওয়ার এবং অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।
এমন বিপর্যয়ের মধ্যে আজ ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সার জেরুজালেমে সাংবাদিকদের বলেছেন, হামাসকে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রসমর্পণ করতে হবে। একই সঙ্গে গাজা বন্দী বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। এর মাধ্যমেই কেবল হামলা থামানো সম্ভব। জবাবে হামাসের কর্মকর্তা বাসেম নাইম রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁরা অস্ত্রসমর্পণ করবেন না। তবে জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার মানুষ।
![]() |
| ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের শোকার্ত স্বজনেরা। আজ রোববার গাজা নগরীতে। ছবি: এএফপি |

No comments