কোনো ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ সহ্য করবে না ভারত: দেশবাসীকে মোদি

পেহেলগামে যে সন্ত্রাসীরা নৃশংস হত্যা চালিয়েছে তাদের সঙ্গে বিশ্বের নানা প্রান্তের সন্ত্রাসী হামলার সংযোগ রয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার ভারতীয় সময় রাত আটটায় দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে মোদি বলেন, অপারেশন সিঁদুর ন্যায়ের অখণ্ড প্রতিজ্ঞা ছিল। এই অপারেশন এখনও জারি রয়েছে। ভারত কোনো ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ সহ্য করবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী সর্বদা সতর্ক। আকাশ, জল থেকে মাটি- সর্বত্র আমরা প্রস্তুত থেকেছি। ‘নতুন নর্মাল’ তৈরি করেছে সেনা। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আবার জবাব দেয়া হবে।

মোদি জোরের সঙ্গে বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হলে তা হতে হবে সন্ত্রাস নিয়ে এবং পাক অধিগৃহীত কাশ্মীর নিয়ে। পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে মোদি বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের চোখরাঙানি সহ্য করবে না ভারত। পাকিস্তানকে যদি বাঁচতে হয় ওদের সন্ত্রাসের পরিকাঠামো নির্মূল করতে হবে।

ভারতের সেনাবাহিনীকে স্যালুট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন  সিঁদুর-এ আমরা সেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছি। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ হাতিয়ার তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। অপারেশনের সাফল্য নিয়ে মোদি বলেন, আমাদের স্কুল-কলেজ, সাধারণ নাগরিকের বাড়িঘর, মন্দিরকে নিশানা করল পাকিস্তান। এখানেও ওরা ব্যর্থ হল। দুনিয়া দেখল কীভাবে পাকিস্তানের ড্রোন, মিসাইল ভারতের কাছে ধূলিসাৎ হল। আকাশেই নষ্ট করে দেয়া হল। তিন দিনে পাকিস্তানকে যা করা হয়েছে, যা ওরা ভাবতেই পারেনি। এখন ওরা বাঁচার রাস্তা খুঁজছে। দেশে দেশে ঘুরছে। খারাপ ভাবে হেরে যাওয়ার পরে ১০ মে পাকিস্তানি সেনা আমাদের ডিজিএমও-র দ্বারস্থ হন। তার আগে আমরা পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছি।

যুদ্ধে ভারত যেসব সফলতা দাবি করল

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে। কিন্তু এই কয়েকদিনের ‘যুদ্ধে’ কার কি ক্ষতি হলো, তা নিয়ে দুই সেশের সেনাবাহিনী বিবৃতি দিয়েছে। পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী তাদের সফলতার কথা জানিয়েছেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতকে। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অপারেশন সিঁদুরের সফলতা সম্পর্কে জানিয়েছে।

এ নিয়ে অনলাইন এনডিটিভি জানিয়েছে, পাকিস্তান ও পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে যেসব স্থানে অপারেশন সিঁদুর চালানো হয়েছে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। হামলার আগের এবং পরের ছবি প্রকাশ করে তুলনামুলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ভারত ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। তাতে কমপক্ষে ১০০ উগ্রপন্থি নিহত হয়েছেন। স্যাটেলাইটে ধারণ করা ওই ছবিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেটের তুলনা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো মুরিদকে অন্যটি ভাওয়ালপুর।

ভারত দাবি করেছে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার ও এয়ারফিল্ডে প্রতিশোধমুলক হামলা চালিয়েছে তারা। ভারতের দাবি তারা পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরজুড়ে ‘উগ্রপন্থিদের অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে হামলা করেছে। এর মধ্যে আছে লস্করে তৈয়বা, জৈশ ই মোহাম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেশনাল সেন্টার। গত সপ্তাহে রাতভর হামলায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই সংগঠনের ৯টি স্থাপনায় হামলা করেছে। এর মধ্যে চারটি পাকিস্তানে। পাঁচটি আজাদ কাশ্মীরে। তবে ভারতের এ দাবি নাকচ করে দিয়ে পাকিস্তান জানিয়েছে উগ্রপন্থিদের আস্তানায় নয়, ভারত হামলা চালিয়েছে বেসামরিক লোকজনের ওপর। যারা এই হামলায় নিহত হয়েছেন তারা বেসামরিক সাধারণ মানুষ।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.