রাশিয়ান হেফাজতে থাকা ইউক্রেনীয় সাংবাদিককে অকথ্য নির্যাতন: দেহ দেখে শিউরে উঠেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা

ইউক্রেনীয় সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া রোশচিনার মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গেছে। ২০২৩ সালে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ইউক্রেনীয়দের অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিষয়ে রিপোর্ট করার সময় রাশিয়ান বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। ইউক্রেনীয় প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিসের যুদ্ধাপরাধ ইউনিটের প্রধান ইউরি বেলোসভের বর্ণনা অনুযায়ী, রাশিয়ান হেফাজতে থাকাকালীন ২৭ বছর বয়সী রোশচিনা ব্যাপক নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষরণ, পাঁজরের ভাঙা অংশ, ঘাড়ে আঘাত এবং পায়ে সম্ভাব্য বৈদ্যুতিক শকের চিহ্ন।

বেলোসভ আরও উল্লেখ করেছেন যে, রোশচিনার দেহ ইউক্রেনে ফেরত পাঠানোর আগে তার শরীরে কিছু অঙ্গ অনুপস্থিত ছিল। বেলোসভ বলেন, নিখোঁজ অঙ্গগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, রাশিয়া মৃত্যুর কারণ লুকানোর চেষ্টা করেছিল। সম্ভবত এটি গোপন করার জন্য যে, তারা যুদ্ধাপরাধ করেছে। তদন্ত দলের সদস্যদের বরাত দিয়ে ইউক্রেনস্কা প্রাভদায় রোশচিনার সহকর্মীরা জানিয়েছেন যে, তার শরীরে মস্তিষ্ক, চোখের মণি, শ্বাসনালী অনুপস্থিত ছিল। রোশচিনার মৃত্যু ব্যাপক নিন্দার জন্ম দিয়েছে, ইউক্রেনস্কা প্রাভদার সম্পাদক সেভগিল মুসাইয়েভা তাকে একজন নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন যিনি রাশিয়ান-অধিকৃত অঞ্চল থেকে রিপোর্টিংকে একটি মিশন হিসেবে দেখেছিলেন।

ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম হ্রোমাডস্কেতে তার এক সহকর্মী বলেছেন, ‘তার কাছে সাংবাদিকতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই ছিল না। ভিকা সর্বদা দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো কাভার করতেন। কিন্তু রাশিয়ানরা তাকে হত্যা করেছে।’

কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টসও রোশচিনার মৃত্যুর নিন্দা জানিয়ে রাশিয়াকে দায়ী করেছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা হাজার হাজার নাগরিককে অভিযোগ ছাড়াই বা আইনি পরামর্শের সুযোগ ছাড়াই রাশিয়ার হেফাজতে আটকে রাখার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। রাশিয়া খারকিভ এবং ডিনিপ্রো শহরে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে একজন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে।  

সূত্র : এনডিটিভি

mzamin

No comments

Powered by Blogger.