মহাকাশে বাড়ছে আবর্জনা, অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় বিপদ ঘটবে না তো?

আমরা যখন মহাকাশ অন্বেষণ এবং লক্ষ লক্ষ রহস্য সমাধানের চেষ্টা করছি, তখন মহাকাশের আবর্জনাই  আমাদের নিজস্ব গ্রহের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। অকেজো কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেটের পরিত্যক্ত অংশ, মিশন-সংক্রান্ত আবর্জনা (লেন্স ক্যাপ বা সেপারেশন বোল্ট জাতীয় যন্ত্রপাতি ইত্যাদিকে স্পেস ডেব্রিস বা মহাকাশের আবর্জনা বলা হয়। এই ধ্বংসাবশেষ কার্যক্ষম মহাকাশযান, উপগ্রহ এবং ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি। ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর মহাকাশ যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে কক্ষপথে কার্যক্ষম উপগ্রহের চেয়ে এখন স্পেস ডেব্রিসের পরিমাণ বেশি।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি প্রতি বছর একটি করে মহাকাশ-পরিবেশ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। যা থেকে ছবিটা পরিষ্কার হচ্ছে। ২০২৫ সালের রিপোর্ট কিন্তু ভয় ধরাচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য সাজিয়েই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, মহাকাশে অন্তত ৪০ হাজার বস্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও সংখ্যাটা আরও বেশি বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১ সেমির বেশি আকারের বস্তুরই পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিপদ হতে পারে। ১২ লক্ষের বেশি মহাকাশ-বর্জ্য জমেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিতকারী টুল MASTER দেখাচ্ছে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার উচ্চতার মধ্যে ঘুরে বেড়ানো এই বর্জ্যগুলি সক্রিয় কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গেই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। ফলে যখন তখন বড়সড় সংঘর্ষের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কেবল ২০২৪ সালেই অন্তত হাজার তিনেক বর্জ্যকে ঘুরপাক খেতে দেখা গিয়েছে মহাকাশে। কেবল পৃথিবীতে আছড়ে পড়াই নয়, মহাকাশযানের সঙ্গে তাদের ধাক্কা লাগার আশঙ্কা মহাকাশ অভিযানের নিরাপত্তা হ্রাস করছে।

সামগ্রিকভাবে, ২০২১ সালের শেষের দিকে একটি উপগ্রহ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ফলে এই আবর্জনার সংখ্যা আরো বেড়েছে। সংঘর্ষ এবং পরিবেশগত উদ্বেগ থেকে শুরু করে, মহাকাশ আবর্জনার থেকে বেশ কিছু ঝুঁকি  রয়েছে। কার্যকরী মহাকাশযানের সাথে তাদের সংঘর্ষ হতে পারে, যার পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ প্রযুক্তির মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।

সূত্র : wionews

mzamin

No comments

Powered by Blogger.