বাবা জুলাই আন্দোলনে শহীদ: ধর্ষণের শিকার মেয়ের আত্মহত্যা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হন বাবা। বাবা হারানোর একরাশ কষ্ট বুকে নিয়ে জীবন চলছিল কলেজ পড়ুয়া মেয়ের। কিন্তু এরই মাঝে তার জীবনেও ঘটে যায় ভয়ংকর ঘটনা। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তিনি। এরপর আসামি গ্রেপ্তার হলেও ক’দিন বাদেই বেরিয়ে আসেন। এই ক্ষোভে, আতঙ্কে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টা করেন তিনি। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

গত ১৮ই মার্চ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে এই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তার পরেরদিনই সাকিব মুন্সী নামে অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, ঘটনার দিন মেয়েটি তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথে নলদোয়ানী এলাকা থেকে সাকিব ও সিফাত তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মুখ চেপে ধরে পাশের জলিল মুন্সির ভিটা বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তারা ধর্ষণ করেন এবং ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় দু’জনের নাম উল্লেখ করে দুমকি থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী।

রাজধানীর আদাবর শেখেরটেক এলাকার একটি বাসায় জুলাই আন্দোলনের শহীদ জসীমউদ্দীনের মেয়ে লামিয়া ‘আত্মহত্যা’ করেন। এর আগে লামিয়াকে অচেতন অবস্থায় তার পরিবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাকারিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, লামিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রাজধানীর শেখেরটেক এলাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পটুয়াখালীতে সেই কলেজছাত্রীর বাড়ি
"আমার নাতনিটা আজ বাড়ি আসবে বলছিলো। কিন্তু সে যে লাশ হয়ে আসবো তা তো বুঝি নাই। আমি এখন তার জন্য কবর খুঁড়ি," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন নিজ এলাকায় ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ঢাকায় এসে আত্মহননের পথ বেছে নেয়া পটুয়াখালীর কলেজছাত্রীর দাদা আব্দুস সোবহান। (ছবির ক্যাপশান, পটুয়াখালীতে সেই কলেজছাত্রীর বাড়ি) বিবিসি বাংলা



No comments

Powered by Blogger.