গ্রিনল্যান্ডের নির্বাচনে জয়জয়কার ট্রাম্প বিরোধীদের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, ‘প্রতিবেশী’ গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার অধীনে আনবেন তিনি। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসার পরেও সেই কথা শোনা গেছে রিপাবলিকান এই নেতার মুখে। কিন্তু সেই দ্বীপের নির্বাচনেই ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প। তার বিরোধী মতাদর্শে বিশ্বাসী ডেমোক্র্যাটস পার্টি বিপুল সাফল্য পেল গ্রিনল্যান্ডের পার্লামেন্টের নির্বাচনে। ৩১টি আসনের মধ্যে ১০টিই গেছে তাদের দখলে।

উল্লেখ্য, স্বায়ত্তশাসিত হলেও গ্রিনল্যান্ড রয়েছে ডেনমার্কের অধীনে। ৩১ আসনের গ্রিনল্যান্ড পার্লামেন্টের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ‘ম্যাজিক ফিগার’ হলো ১৬। এবারে নির্বাচনে মোট ছ’টি দলের প্রার্থীরা লড়ছেন। ঘটনাচক্রে, তার মধ্যে চারটি দলই ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্রিনল্যান্ডের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে। ২০১৮ সালের পার্লামেন্টের ভোটে জিতে গ্রিনল্যান্ডে ক্ষমতা দখল করেছিল কমিউনিটি অফ দ্য পিপল (আইএ) এবং ফরোয়ার্ড (এস) দলের জোট সরকার। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন আইএ নেতা মিউটে এগেদে।

এবারের ফলাফল প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আসন গিয়েছে ডেমোক্র্যাটস পার্টির ঝুলিতে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড দখলের কথা বললে সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ এই দলটিই করেছিল। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তারা। আটটি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্বাধীনতাকামী নালেরাক পার্টি। তৃতীয় স্থানে প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেদের দল আইএ। অর্থাৎ, ২০১৮ সালের পর ফের জোট সরকারই গ্রিনল্যান্ডে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে।

ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ৫৬ হাজার জনসংখ্যার ‘বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ’ এই গ্রিনল্যান্ড। নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো পরিচালনা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত দায়িত্ব দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসিত কর্তৃপক্ষ পালন করেন। আর বিদেশ এবং প্রতিরক্ষানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো নেয় ডেনমার্ক সরকার।

গত সপ্তাহেই মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার সময় ট্রাম্পের হুঙ্কার ছিল, যেকোনো উপায়ে হোক পানামা গ্রিনল্যান্ডের দখল নেবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে গ্রিনল্যান্ডবাসী বেছে নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরোধীকেই।

জয়ী ডেমোক্র্যাট নেতারা পাবলিক ব্রডকাস্টার কেএনআরকে জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্ত আচরণ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী যখন বড় উন্নয়ন ঘটছে, তখন তাদের একসঙ্গে দাঁড়ানো উচিত এবং এক সুরে কথা বলা উচিত।

সূত্র: বিবিসি

mzamin

No comments

Powered by Blogger.