‘বইগুলো ব্যাগের ভেতরেই আছে, আমি আবার আসব’
কথাগুলো চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তারের (১০)। কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস মরিয়মকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান। তখন সে তার শিক্ষককে এসব কথা বলে। ২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মরিয়মের মৃত্যু হয়।
গত ২২ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় মরিয়ম আক্তার ও রাফসি আহসান (১০)। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরিয়মের শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান চিকিৎসকেরা। অপর আহত তৃতীয় শ্রেণির রাফসির এক হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস দাবি করেন, ‘ছাদে সব সময় তালা দেওয়া থাকে। কে বা কারা তালা খুলে দিয়েছে, তা দেখেননি তিনি। অসাবধানতাবশত পল্লি বিদ্যুতের খোলা লাইনে লেগে দুই শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
মরিয়ম আক্তার তার মামাবাড়িতে থাকত। তার মামা আবদুর রহমান জানান, ‘বিদ্যালয় ঘেঁষে ৪৪ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার রয়েছে। এ কারণে পুরো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমার ভাগনিকে জীবন দিতে হয়েছে।’
অপর শিক্ষার্থী রাফসি আহসানের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে তার বাবা মো. রনি জানান। তিনি বলেন, চিকিৎসক চেষ্টা করছেন তাকে সুস্থ করে তুলতে। রাফসির ডান হাত কেটে ফেলা হয়েছে। দুটি পা কেটে ফেলা হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. শফিউল আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত টিম এসেছে। বিষয়টি এখনো তদন্ত চলছে। অনেক বছর আগে বিদ্যালয়ের ভবনের পেছন দিয়ে বিদ্যুতের লাইনটি নির্মিত হয়েছে। এ কারণে এটি আমাদের নজর এড়িয়ে যায়।’
![]() |
| স্কুলের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মরিয়ম আক্তার ২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হার মানল। ছবি: সংগৃহীত |

No comments