যে কারণে হাড় পচে যাচ্ছে বারনেত্তির

যুক্তরাষ্ট্রের টিনেসিতে নাসিং পেশায় জড়িত ছিলেন ব্রিটানি বারনেত্তি (৩৪)। তিনি দাবি করেছেন এবং তার ডাক্তাররা তাকে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের টীকা নেয়ার পর থেকে তার আর্থাইটিস হয়েছে। এর ফলে শরীরের হাড় পচে যাচ্ছে। এরই মধ্যে মরে যাওয়া হাড় বদলে ফেলতে কয়েক ডজন সার্জারি করা হয়েছে তার শরীরে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।

এতে বলা হয়, একটি নার্সিং হোমের পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। নিজের রাজ্য টিনেসিতে ২০২০ সালে যখন করোনা ভাইরাস মহামারী হানা দেয়, তখন তিনি রোগিদের সেবা দিচ্ছিলেন। তার চোখের সামনে রোগীরা মারা যাচ্ছিলেন। সন্তান তার কাছ থেকে করোনায় আক্রান্ত হবে এই ভয়ে নিজের ছেলের জন্মদিনে যোগ দেননি তিনি। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে করোনার টীকা চলে আসে। রোগিদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য নিজে একটি নামকরা কোম্পানির টীকা নিয়ে নেন। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বুঝতে পারেননি তিনি। কিন্তু ২০২১ সালের জুলাইয়ে তার নিতম্বের উভয় পাশে অসহনীয় বেদনা শুরু হয়। তাকে বলা হয় ৩১ বছর বয়সে তিনি আর্থাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। যখন ব্যথায় হাঁটতে পারবেন না, তখন যেন তিনি হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন- এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে এই ব্যথাকে অন্যকিছু মনে করে আরেকজন ডাক্তার তাকে এমআরআই করাতে পরামর্শ দেন। তাতে ধরা পড়ে মিস বারনেত্তির হাড় আক্ষরিক অর্থেই পচে যাচ্ছে। এ কারণে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবার তার নিতম্বের প্রতিস্থাপনের অপারেশন করানো হয়। এর দু’এক মাস পরে ২০২২ সালে দ্বিতীয় অপারেশন করা হয়। এরপর প্রায় চার বছর ধরে মিস বারনেত্তিকে অপারেশনের টেবিলে বার বার শুয়ে পড়তে হয়েছে। তার দুই কাঁধ, হাঁটুতে অপারেশন করা হয়েছে। কনুইতে করা হয়েছে তিনটি অপারেশন। বাম পায়ে একটি অপারেশন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তার ডানপায়ে আরেকটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। মিস বারনেত্তির এই দুর্ভোগ শুরুর প্রায় এক বছরের মধ্যে একজন ডাক্তার তাকে বলেছেন, এই জটিলতার সঙ্গে ২০২২ সালের শেষের দিকের কোভিড এবং তারপর টীকার সম্পর্ক আছে।

মিস বারনেত্তি বলেন, এই ব্যথা এতটাই তীব্র যে আমার পুরো জীবনে এত কষ্ট কখনো ভোগ করিনি। সব সময় চেষ্টা করেছি মানুষের যত্ন নিতে। ওদিকে তার শারীরিক এই অবস্থার কারণে একজন নার্স হিসেবে এবং প্রবীণদের যত্ন নেয়ার কেন্দ্রে পরিচালক হিসেবে কাজ করতে অক্ষম। তিনি বলেন, এখন আর সকালে বাচ্চাদের  স্কুলে নিয়ে যেতে পারি না। এটা বিপর্যয়কর। একটি ভাইরাস এবং একটি টীকার কারণে আমার জীবন হারিয়ে গেছে। আমি আর সেই জীবনে ফিরতে পারবো না। এতে আমার জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাকে এখন সবসময় বসে থাকতে হয়। আর পিছনের সব হিসাব মিলাই। ওদিকে গত সপ্তাহে ইয়েল ইউনিভার্সিটির একটি ছোটখাট গবেষণা এমন সব ভিকটিমকে সমর্থন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এসব সমস্যাকে পোস্ট-ভ্যাক্সিনেশন সিনড্রোম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.