হাসান নাসরুল্লাহর জীবনী
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লার প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ তথ্য জানায় বলে এএফপির খবরে বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনটির মহান ও অমর শহীদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন; যাদের তিনি ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে ১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ওই বছর গোষ্ঠীটির সাবেক প্রধান নেতা আব্বাস আল-মুসাওই ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণ হারান। হিজবুল্লাহ প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। সে অনুযায়ী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার নির্দেশ দেন তিনি।
১৯৬০ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জন্ম হয় হাসান নাসরুল্লাহর (৬৪)। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।
নিজের জীবনের শুরুতে লেবাননের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিয়াদের আমল আন্দোলনে যোগ দেন নাসরুল্লাহ। এক সময় কোরআনের দীক্ষা নিতে ইরাকে যান তিনি। কিন্তু ১৯৭৮ সালে নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কারণ ওই সময় শিয়া মুসলিমদের ওপর ইরাক সরকার চাপ প্রয়োগ করছিল।
১৯৮২ সালে লেবাননে স্থল হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রতিহত করতে হিজবুল্লাহ নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি করে ইরানের চৌকস বিপ্লবী গার্ড। নাসরুল্লাহ তখন হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। পরে সময়ে দলটির নেতৃত্বে আসেন তিনি।
নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর দায়িত্ব নিয়ে তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিতেও পরিণত করেন।
প্রসঙ্গক্রমে, হিজবুল্লাহর চাপে পড়ে ২০০০ সালে দখলদার ইসরায়েল তাদের সেনাদের লেবানন থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার মধ্যপ্রাচ্যে নাসরুল্লাহর গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। তবে নাসরুল্লাহর ব্যক্তিগত ক্ষতিও কম হয়নি। ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রাণ দিতে হয় তার বড় ছেলে হাদিকে।
নাসরুল্লাহ ইসরায়েল নিয়ে এক মন্তব্যে বলেছিলেন, আমি ইসরায়েলকে বৈধ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বাস করি না কারণ এটি দখলদারিত্বের ওপর তৈরি হয়েছে।
লেবানন সরকারের কোনো দায়িত্বে নাসরুল্লাহ ছিলেন না। তবে দেশটির প্রশাসনের ওপর তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর ওপরও প্রভাব বিস্তারে সক্ষমতা ছিল তার।
তাছাড়া নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের লক্ষ্যে ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের এক সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর।
সর্বশেষ হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের উত্তেজনা বেড়ে যায় গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে। ওই দিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করে দেশটি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যেই ইসরায়েলের অভ্যন্তর ও দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ।
উল্লেখ্য, লেবাননে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেখান থেকে নাসরুল্লাহ গোষ্ঠীটিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখার আকার লেবাননের মূল সেনাবাহিনীর চেয়েও বড়। সামরিক শক্তিতে হিজবুল্লাহ লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী। দেশটির ক্ষমতার অন্যতম ভারকেন্দ্র এই গোষ্ঠী।
এছাড়া সামরিক শাখার বাইরেও গোষ্ঠীটি লেবাননের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সেবা খাতের প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষা, সমাজ সেবার এমন কোনো খাত নেই যেখানে হিজবুল্লাহর পদচারণা নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহকে ইরানের সবচেয়ে বড় প্রক্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনটির মহান ও অমর শহীদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন; যাদের তিনি ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে ১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ওই বছর গোষ্ঠীটির সাবেক প্রধান নেতা আব্বাস আল-মুসাওই ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণ হারান। হিজবুল্লাহ প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। সে অনুযায়ী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার নির্দেশ দেন তিনি।
১৯৬০ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জন্ম হয় হাসান নাসরুল্লাহর (৬৪)। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।
নিজের জীবনের শুরুতে লেবাননের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিয়াদের আমল আন্দোলনে যোগ দেন নাসরুল্লাহ। এক সময় কোরআনের দীক্ষা নিতে ইরাকে যান তিনি। কিন্তু ১৯৭৮ সালে নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কারণ ওই সময় শিয়া মুসলিমদের ওপর ইরাক সরকার চাপ প্রয়োগ করছিল।
১৯৮২ সালে লেবাননে স্থল হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রতিহত করতে হিজবুল্লাহ নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি করে ইরানের চৌকস বিপ্লবী গার্ড। নাসরুল্লাহ তখন হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। পরে সময়ে দলটির নেতৃত্বে আসেন তিনি।
নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর দায়িত্ব নিয়ে তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিতেও পরিণত করেন।
প্রসঙ্গক্রমে, হিজবুল্লাহর চাপে পড়ে ২০০০ সালে দখলদার ইসরায়েল তাদের সেনাদের লেবানন থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার মধ্যপ্রাচ্যে নাসরুল্লাহর গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। তবে নাসরুল্লাহর ব্যক্তিগত ক্ষতিও কম হয়নি। ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রাণ দিতে হয় তার বড় ছেলে হাদিকে।
নাসরুল্লাহ ইসরায়েল নিয়ে এক মন্তব্যে বলেছিলেন, আমি ইসরায়েলকে বৈধ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বাস করি না কারণ এটি দখলদারিত্বের ওপর তৈরি হয়েছে।
লেবানন সরকারের কোনো দায়িত্বে নাসরুল্লাহ ছিলেন না। তবে দেশটির প্রশাসনের ওপর তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর ওপরও প্রভাব বিস্তারে সক্ষমতা ছিল তার।
তাছাড়া নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের লক্ষ্যে ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের এক সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর।
সর্বশেষ হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের উত্তেজনা বেড়ে যায় গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে। ওই দিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করে দেশটি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যেই ইসরায়েলের অভ্যন্তর ও দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ।
উল্লেখ্য, লেবাননে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেখান থেকে নাসরুল্লাহ গোষ্ঠীটিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখার আকার লেবাননের মূল সেনাবাহিনীর চেয়েও বড়। সামরিক শক্তিতে হিজবুল্লাহ লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী। দেশটির ক্ষমতার অন্যতম ভারকেন্দ্র এই গোষ্ঠী।
এছাড়া সামরিক শাখার বাইরেও গোষ্ঠীটি লেবাননের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সেবা খাতের প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষা, সমাজ সেবার এমন কোনো খাত নেই যেখানে হিজবুল্লাহর পদচারণা নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহকে ইরানের সবচেয়ে বড় প্রক্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
![]() |
| হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত |

No comments