জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি- ডিএমপি কমিশনার

পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। গতকাল রাজধানীর মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) শহীদ এসআই শাহজাহান মিলনায়তনে আয়োজিত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। বলেছেন, একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। মুষ্টিমেয় সদস্যের অপেশাদার কার্যকলাপের কারণে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এটি পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তবে আমরা দিনরাত পরিশ্রমের মাধ্যমে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, যার যার অবস্থান থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং কাজের মধ্যদিয়েই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এমন জায়গায় পৌঁছাতে পারবো যেখানে পুলিশ জনগণের আস্থার প্রতীক হবে। পুলিশের ওপর যে দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে তা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভিন্ন। পুলিশ হলো রাষ্ট্রের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। আমরা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করি। স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। কল্যাণ সভায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফোর্সের উদ্দেশ্যে যেসব দিকনির্দেশনা দেন সেগুলো ধারণ করে প্রত্যেক সদস্যকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, আমাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন পরিবারের প্রতিটি সদস্য গর্ব করে বলতে পারে যে আমার পরিবারে একজন পুলিশ সদস্য রয়েছে। আমরা যে পরিবর্তনের কথা বলছি সেখানে সবার অংশীদারত্ব থাকতে হবে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, যে যেই শাখায় কর্মরত আছেন বা যে যেই দায়িত্বে আছেন তাকে সেই শাখার ফোর্সের কল্যাণে কাজ করতে হবে। কাজের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, আমরা একটা ট্রানজিশন পিরিয়ড পার হয়ে এসেছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে সর্বদা প্রস্তুত রাখতে হবে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে একটি টিম হিসেবে কাজ করে আমাদের জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সবাই অধিকার সচেতন। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে এবং নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্‌, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী বলেন, আমরা জনগণের প্রতিপক্ষ নই, আমাদের জনগণের জন্যই কাজ করতে হবে। শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিধি-বিধান মেনে করতে হবে। এ ছাড়াও লজিস্টিকস সংক্রান্ত উপস্থাপিত যাবতীয় সমস্যা অচিরেই সমাধান করা হবে মর্মে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় ডিএমপি’র বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যরা তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যা ও চাহিদার কথা ডিএমপি কমিশনারের কাছে পেশ করেন। কমিশনার সবার বক্তব্য মনোযোগসহকারে শোনেন এবং প্রত্যেকটি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। সভা শেষে ডিএমপি কমিশনার ফোর্সের ব্যারাক ও মেস পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। কল্যাণ সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনার ও পিওএম (উত্তর, দক্ষিণ, পশ্চিম) বিভাগের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.