হায়দ্রাবাদের ঐতিহাসিক চারমিনার

দক্ষিণ ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরের চারমিনার বিশ্বখ্যাত ভারতীয় স্থাপত্যগুলির অন্যতম৷ আগ্রার তাজমহলের মতোই পরিচিত স্থাপত্য এই চারমিনার৷ এ নামের একটি ব্র্যান্ডের সিগারেটও বহু বছর ধরে ভারতে জনপ্রিয়, বিশেষ করে বাঙালিদের মধ্যে৷
শাহী স্থাপত্য: একসময় কুতব শাহী সাম্রাজ্যের রাজধানী হায়দ্রাবাদ শহরের চারমিনার তৈরি হয়েছিল ১৬ শতকে৷ মধ্যে এক মসজিদকে ঘিরে চার কোণে অনুচ্চ চারটি মিনার, যার থেকে এর নাম হয় চারমিনার৷
ব্যস্ত বাজার: ভারতের নবগঠিত তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাজধানী শহর হায়দ্রাবাদের পুরনো অংশে এই চারমিনার, যার পাশেই বহু পুরনো এবং জনপ্রিয় লাদ বাজার, যা হামেশাই ব্যস্ত৷
রঙিন চুড়ি: চারমিনারের লাগোয়া এই বাজার বিখ্যাত তার রংবেরঙের চুড়ির পশরা, আর ঝুটো পাথরের গয়নার জন্যে, যার মূল খদ্দের অবশ্যই মহিলারা৷
ধর্মীয় আবহ: চারমিনার বাজারে নমাজ পড়ার নকশাদার কার্পেট থেকে ধর্মগ্রন্থ, তসবি, পোশাক, নানা ধরনের উপকরণ বুঝিয়ে দেয়, হায়দ্রাবাদ ঐতিহ্যগতভাবেই ধর্মপ্রাণ শহর৷
ফলের বাজার: হায়দ্রাবাদের অন্যতম বড় ফলের বাজারটিও চারমিনারের সামনে৷ ঈদের রোজা ভাঙার আগে সেখানে ভিড় লেগেই থাকে৷
প্লেগ বিজয়ের স্মারক: শহরের মাঝখানে কেন এই স্থাপত্য গড়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে অনেক তত্ত্ব আছে৷ তবে ঐতিহাসিকভাবে সবথেকে প্রামাণ্য তথ্য হলো, দক্ষিণ ভারতের এই অঞ্চলে প্লেগ রোগ দূরীকরণে সাফল্যের স্মারক এই চারমিনার৷
বাগমতীর স্মৃতি: তবে লোকপ্রিয় প্রচলিত কাহিনি হলো, বাদশা মহম্মদ কুলি কুতব শাহ হায়দ্রাবাদের যেখানে তাঁর হবু বেগম, রানি বাগমতীকে প্রথম দেখেছিলেন, সেখানেই তৈরি হয়েছিল এই ভালোবাসার স্মারক৷
জোড়া বারান্দা: চারমিনারের বিশেষত্ব হলো তার জোড়া বারান্দা, যা ঠিক খিলানের ওপরের অংশে, চার কোণের চারটি মিনারকে জুড়ে রয়েছে৷
স্থাপত্য স্বকীয়তা: গ্র্যানাইট পাথর, চুনা পাথর, শ্বেতপাথরের গুঁড়ো এবং সুরকির মিশ্রণে তৈরি এই অনুপম স্থাপত্য, যা প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ করে৷
মক্কা মসজিদ: পবিত্র মক্কা থেকে মাটি আনিয়ে চারমিনারের অদূরে অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদটি গড়েছিলেন কুতব শাহ, যা আজও সারা ভারতের মুসলিমদের অন্যতম পবিত্র ধর্মস্থান হিসেবে সম্মানিত৷

No comments

Powered by Blogger.