পা ফোলার বিভিন্ন কারণ ও প্রতিকার

পা ফুললেই অনেকে ভয় পেয়ে যায়। অনেকে ভেবে বসেন কিডনী নষ্ট হয়ে জীবন বুঝি শেষ হয়ে গেল। পা ফোলা অবশ্যই একটি সমস্যা। কিন্তু সব সময়ই এটি যে খুব জটিল কোন কারণে হয় তা নয়। সুতরাং পা ফুলে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে ভাল একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ।

পা ফোলার কারণ:

. হার্ট ফেইলিউর হলে পা ফুলতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু যে পা ফোলে তা নয়। শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় এবং বুক ব্যাথাও থাকে।

. কিডনীর অসুখে পা ফোলে। তবে প্রথমে মুখ ফোলে এবং শেষের দিকে পা ফোলে।

. অনেক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসলে পা ফুলতে পারে।

. অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পা ফুলে যায়।

. লিভার ফেইলিউরে পা ফোলে। তবে অন্যান্য উপসর্গও থাকে।

. উচ্চ রক্তচাপ ব্যবহৃত এমন কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে পা ফুলে যেতে পারে। এমলোডিপিন বহুল প্রচলিত একটি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ। এটি গ্রহণ করলে পা ফোলে।

. গর্ভাবস্থায় অনেকেরই পা ফোলে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

. পেটে বড় টিউমার হলে পা ফুলতে পারে। টিউমার রক্তনালীর উপর চাপ তৈরি করে। ফলে পা থেকে রক্ত হৃদপিন্ডে অসতে পারেনা এবং পা ফুলে যায়।

. ভেরিকোস ভেন হলে পা ফুলে যায়।

১০. হাইপোথাইরয়ডিজমে পা ফোলে। তবে এক্ষেত্রে চাপ দিলে চামড়া বসে না। অভিজ্ঞ চিকিৎসক এটি সহজেই ধরতে পারেন।

১১. মারাত্মক রক্তাল্পতা বা অপুষ্টিতে পা ফোলে। থায়ামিন ভিটামিনের অভাবে বেরি বেরি হয়। তখন পা ফোলে।

১২. ফাইলেরিয়া রোগ হলে পা ফুলতে পারে। ফাইলেরিয়া পরজীবী দিয়ে হয়।

১৩. গর্ভবস্থায় এক্লাম্পসিয়া ও প্রিএক্লাম্পসিয়া হলে পা ফুলে যায়। এমন হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। না হলে প্রান হারাতে হতে পারে।

১৪. ডিপ ভেন থ্রম্বসসি হলে একদিকের পা ফোলে। দুদিকে নয়।

পা ফুলে গেলে একজন ভাল চিকিৎসকের নিকট যাওয়া উচতি। কারণ খুব সামান্য কারণে যেমন পা ফোলে আবার ডিপ ভেন  থ্রম্বসসি এর কারণেও কিন্তু পা ফোলে। বিমানে দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ করলে এবং বহুদন শয্যাশাযী থাকলে বা বড় অপারেশনের পরে এক পা ফুলে গেলে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিসের কথা মাথায় রাখা উচিৎ। এ রোগ পুষে রাখলে পায়ের শিরায় জমে থাকা রক্তের ডেলা ফুসফুসে চলে গিয়ে পালমোনরী এম্বলিজম তৈরি করে। এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
>>>ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল, সহকারী সার্জন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

No comments

Powered by Blogger.