নারী

হাজী সাহেবের বউ মারা গিয়েছে অল্প কয়দিন হলো মাত্র। এরই মধ্যে নতুন বউ ঘরে তুলছে মরিয়া হয়ে উঠেছে। পাড়া-প্রতিবেশীরা এই নিয়ে কত রং ঢং করে তার ইয়ত্তা নেই। পুরো এলাকা যেন হাসি-তামাশার মঞ্চে পরিণত হয়েছে। কি বুড়ো আর কি-বা যুবক; সবার মুখে একটি বচন-বুড়ো হাজীর শরীর থেকে যৌবনের তাপ এখনো যায় নাই। এক পা কবরে গেছে আর এক পা টেনে হিঁচড়ে চলে— তবু সালার বউ দরকার। এই বুড়ো বয়সে বউয়ের শখ মজে নাই। চমড়াগুলো তো টান দিলে দুই-তিন হাত লম্বা হয়। লাঠি ভর দিয়ে চলা-ফেরা করে— বউ দিয়া কি করব?

ছেলে-মেয়েদের বিয়ে-শাদী হয়ে যাওয়ায় নিজেদের সংসার নিয়ে মহাব্যস্ত। তাদের ছেলে-মেয়েরাও অনেক বড়-সড় হয়েছে। মেয়েরা স্বামীর বাড়িতে সুখে-শান্তিতে আছে আর ছেলেরা বউ পোলাপাইন নিয়া দিব্যি ভালো আছে। সবাই সবার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। সংসারের বুড়ো আর বুড়ি; দুই জনেই ছিল একে অপরের সহযোগী; সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেয়ার মতো সঙ্গী। কিন্তু বুড়িটা চলে যাওয়ায়-বুড়াটার জ্ঞানশক্তি লোপ পেয়েছে। বুড়ি ছাড়া বুড়োর যেন একটি মুহূর্ত কাটতে চায় না। খোদায় যদি বুড়ো আর বুড়ি দুইটাকে এক সঙ্গে নিয়ে যেত— তাহলে এতো জ্বালা-যন্ত্রণা বুকে নিয়ে আধ মরা হয়ে বেঁচে থাকার দরকার হতো না-বুড়োর। গ্রামের ময়-মুরব্বিরা বলা বলি করতে লাগল, না জানি বুড়িটার শোকে এমন হয়েছে।

সব কিছু মিলিয়ে বুড়ার মনে শান্তি নেই। কিসের অশান্তিতে বুড়ো মনমরা হয়ে আছে। তা পৃথিবীর কাউকে বুঝানো যাবে না। এটা একমাত্র বুড়োই জানে। খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা সবই ঠিক আছে কিন্তু হূদয়ের মধ্যে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে; তার খবর কে রাখে। সবাই তো দেখতে পায়, হাজী সাহেবের কোন সমস্যা নেই। নায়-নাতনি নিয়ে খুবই ভালো আছে। কেউ দাদা বলে ডাক দেয় আবার কেউ বা নানা বলে ডাক দেয়। কেউ বা বুড়োর মাথা থেকে পাকা চুলগুলো নিয়ে খেলা করে। আবার কখনো শরীরের ঢিলে চামড়া ধরে টেনে টেনে দেখে— কতটুকু লম্বা হয়। বুড়ো বয়সে শরীরের গঠন এমন-যৌয়ান বয়সে যে কেমন শক্তিশালী ছিল— তা নিয়ে নাতি-নাতনিরা আলাপ আলোচনা করে।

ছেলে-মেয়েদের পীড়াপীড়িতে পাড়ার ময়-মরব্বিরা বৈঠকে বসল। হাজী সাহেবের কি অসুবিধা, কিসের অভাব-যে নতুন বউ ঘরে আনতে হবে। সংসারে আগুন জ্বালাতে চায়। নতুন ভাগিদার তৈরি করে— একটা যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে চায়।

এছাড়া এলাকার বিভিন্ন মানুষজন বিভিন্নভাবে আলোচনা সমালোচনা করে। নিজেদের মান-সম্মানে আঘাত লাগে। তাই ছেলে-মেয়েরা এক পায়ে দাঁড়িয়েছে— যত কষ্টই হোক; তারা বুড়ো বাপকে আদর-যত্ন করবে। সেবা-যত্নের কোনো রকম ঘাটতি করবে না। কিন্তু নতুন করে বিবাহ করতে দিবে না— এক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই বুড়োকে বিভিন্নভাবে যুক্তি দিয়ে জ্ঞান দিচ্ছে। শেষ বয়সে সংসারে বিভাজন সৃষ্টি করে কি লাভ। আল্লা-খোদার নাম নিয়ে কবর দেশে যেন ভালোভাবে যাওয়া যায়; সেই চিন্তা-চেতনা যেন মশগুল হয়। বিয়ে-শাদীর বিষয়টা মাথায় থেকে একেবারে বিদায় করে দেয়। আল্লা-রাসুলের নাম জপে জপে মসজিদে বসে বসে জিকির করে সময়টা কাটিয়ে দেয়। বয়স তো আর কম হয়নি— কমছে কম সত্তর আশি তো হবেই। এখন আর বউ বউ করার কি দরকার?

গ্রাম্য সর্দার অলি মিয়া বলল— আল্লা-বিল্লা কর হাজী। বিয়া-টিয়া কইরা আর সংসারে জ্বালা বাড়ানোর কাম নাই। নায়-নাতনি নিয়া হাসি-খুশির মধ্যে কয়েকটা দিন বালায় বালায় কাটাইয়া যাও মিয়া। কি পাগলের মতো চিন্তা-ভাবনা শুরু করছ। মাইনষে হুনলে কি কইব। তা ছাড়া তোমারে নিয়া সারা গ্রামে কি রব উঠছে— তুমি কি তার খবর রাখ!

বুড়ো হাজী সেকান্দার আলী বলল, সর্দারী-মাতবরী তোমার বাড়ি গিয়া কর। আল্লা-রাসুল আমারে শিখাতে আইয় না। কম বুঝে আর অজ কইরা আইছি না। ধর্ম-কর্ম; তোমার চাইতে কম বুঝি না। আমার সয়-সম্পত্তি কম নাই। বউ আইলে কি সমস্যা- হ্যাঁ। ছেলে-মেয়েরা যদি চায়; তাদের ভাগ নিয়া যাক। তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই। ধর্মের বিধান মতে-ভাগ ভাটোয়া করে দিয়া যাও। এছাড়া আর কোনো জ্ঞান-বুদ্ধি দিতে চায় না। আমার মাথা নষ্ট অয় নাই; এখন ঠিক আছে। হুশ-জ্ঞান হারাইছি না।

এদিকে কমলার বাপ-মারা গেছে এক যুগ গেল। কমলার দিকে চেয়ে চেয়ে যুগ-যুগান্তর কাটিয়ে দিল-কমলার মা। কমলার বাপ যখন মারা যায়— তখন সবেমাত্র যৌবনের আলোর ফুটেছে। কাঁচা হলুদের মতো শরীরটা ছিল। এখনো দেখলে মনে হয়-নব বধূ। লাল শাড়ি পড়লে জোয়ান-বুড়ো কারো চোখ ফিরে না। অল্প বয়সে তার বিয়েটা হয়েছিল। প্রাইমারি স্কুল ছেড়ে হাই-স্কুলে যায় কি-যায় নাই, তা বলতে পারে না-কমলার মা। তবে তার বিয়েটা খুব অল্প বয়সে হয়েছে— সেই কথা মনে আছে। স্বামীর সুখ উপলব্ধি করার পূর্বেই স্বামীকে হারাতে হয়েছে। পার্থিব অভাব অনটন না থাকলেও মনের গহিনে যে অভাব রয়েছে; তা তো অপূরণীয়ই থেকে গেল। ছোট্ট একটি শিশু কন্যার ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে নিজের সব চাহিদাকে বিসর্জন দিল। তাছাড়া কমলার নানার কুলে ও দাদার কুলে কারোই দ্বিতীয় বিয়ের রীতি নেই। দুই পরিবারের ঐতিহ্য বলে কথা। তাদের মেয়ে বা পুত্র বউদের কঠিন নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। স্বামী চলে গেলেও তার আঁচল ধরে বাকি জীবন কাটাতে পারলেই সতী সাধবী নারী হিসেবে স্বীকৃতি পায়। একজন নারী দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে যাবে— এটা যেন কেমন কথা। সমাজ এটাকে কোন মতে মেনে নিতে চায় না।

দ্বিতীয় পাত্রী কোনো সংসারে গিয়ে নিজেকে মানিয়ে নিতে খুবই কষ্ট হয়। কত রকমের জ্বালা-যন্ত্রণা তাদেরকে সহ্য করে নিতে হয়। স্বামী মরে গেছে বলে তাদের কপালও পুড়েছে। না পারবে অন্যের সঙ্গে সংসার গড়তে; না পারবে নিজের সংসারে সুখে শান্তিতে থাকতে। তারা যেন একটা অভিশাপের বোঝা নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। তাদের চাওয়া-পাওয়ার কোনো অধিকার নেই। শখ আহ্লাদ বলতে কিছুই নেই। তারা শুধু মাত্র মরে যাওয়া স্বামীর শোক মালা গাঁথবে আর পরপারে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করবে। তাছাড়া কোন শুভ কাজে তাদের অংশগ্রহণ করতে মানা। সমাজে তাদের স্বামী খাওয়া নারী হিসেবে ডাকে। অন্য নারীদের বিশ্বাস যে তারা স্বামী খেয়ে ফেলেছে। তাদের কোন কাজের আগে রাখা যাবে না। তারা যদি থাকতে চায়; তবে সবার পেছনে পেছনে থাকবে কিন্তু কোন কিছু ছুঁতে পারবে না। মোটা সাদা কাপড় হলো তাদের পরিধানের একমাত্র পোশাক। অলংকার ব্যবহার করা ও সাজ-গোছ করা নিষেধ।

এখন কমলার মায়ের মনে আর কোন শখ আহলাদ জাগে না। মনটা একেবারে পাথর হয়ে গেছে। তাই মনের মধ্যে নতুন করে কোন স্বপ্ন বা ভালবাসার জন্ম হয় না। এই মনের জমিনটা মরু সাহারায় পরিণত হয়েছে। এই জমিতে কোন কিছুই জন্মাবার নয় শুধু খা খা করে শেষ প্রান্তের দিকে ধাপিত হওয়াই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কমলাটা দিন দিন বড় হচ্ছে। তাকে কিভাবে সুখি করা যায়। সেই চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। বাপ মরা মাইয়্যা। বাপের অভাব তো আর পূরণ করতে পারবে না। তবু চেষ্টা করতে দোষের কিছু নেই। তিনিই তার বাপ-মা। জীবন যৌবনের সব সুখ বিসর্জন দিয়েছে-এই মেয়েটার জন্য। তাকে কিভাবে মানুষের মতো মানুষ করা যায়-সেটাই এখন তার একমাত্র চাওয়া পাওয়া। তাই শত কষ্ট বুকে ধারণ করে স্বামীর ভিটেবাড়িতে বসবাস করছে।

যে কাজে বিবেক আত্মতৃপ্তি পায় সে কাজে সৃষ্টিকর্তা সন্তুষ্টি হয়। বিবেক মানুষকে কখনো খারাপ কাজের দিকে ধাপিত করতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সে বিবেকহীন না হয়। প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে দুটি সত্তা বিরাজ করে। একটি পবিত্র সত্তা আর অন্যটি অপবিত্র সত্তা। পবিত্র সত্তার প্রকৃত পরিচয় বিবেক আর অপবিত্র সত্তার পরিচয় বিবেকহীন কর্মপন্থা। পবিত্র সত্তার কারণে মানুষের মনে অনুশোচনার জন্ম হয়; ফলে তার মনের অন্তগহিনে লুকায়িত অপবিত্র সত্তার কূ-মন্ত্রণার বন্ধন থেকে আলোর দিকে ছুটে যায়; আত্ম-মুক্তির প্রয়াসে। তবুও মানুষ কোন কোন সময় বিবেকহীন কাজ করে থাকে। মনের খায়েসে অথবা অন্য কারো কূমন্ত্রণায়। হাজী সাহেবও তাদের মনের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে শরীরটাকে চালাতে চাচ্ছে কিন্তু শরীর তো আর লোহা বা পাথর নয় যে চিরকালই এক রকম থাকবে। তবে কোন কোন সময় লোহাতেও মরিচা ধরে। যে যত কথা বলুক আর যত যুক্তি উপস্থাপন করুক কিন্তু হাজী সাহেবের কাছে তা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। কেন না, তার হৃদয়ে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে এবং তিনি যা অনুধাবন করেন-তা বাহ্যিক দৃষ্টি উপলব্ধি করার সাধ্য কারো নেই। বিধির বিধান লঙ্গন করবে কে? হাজী সেকান্দর আলীর এক কথা-তিনি তার শয্যাসঙ্গী চান; এছাড়া কোন কথা তার মাথায় আসছে না। শয্যাসঙ্গীর প্রত্যাশায় তার দিন কাটে। টাকা-পয়সা সয়-সম্পত্তি কোন বিষয় না। তার অনেক সম্পত্তি আছে। কিন্তু মনে সুখ নেই-শান্তি নেই। তাই নজু মোক্তারকে খবর দেয়। খবর পেয়ে নজু মোক্তার হাজীর কাছে ছুটে আসে। নজু মোক্তারের ধারণা যে হাজীর নিকট থেকে ভালো একটা কমিশন পাওয়া যাবে। তাই এই সুযোগটা কাজে লাগাতে সে ভুল করতে পারে না। এক সময় ঘটকালী ব্যাপারটা ছিল সামাজিক কাজের অংশ। মানুষ ছওয়াব পাওয়ার আশায় ছেলে-মেয়েদের বিয়ে সাদীর ব্যবস্থা করে দিত। কিন্তু বর্তমানে ঘটকালিটা হয়ে গেছে ব্যবসা ও পেশা। অনেকেই এখন ঘটকালি করে উপার্জন করে সংসারে চাহিদা মেটায়।

হাজী সাহেব মোক্তারকে বলেন, ঐ মুক্তাইরা। কিতা করচ। এতো দিন অইল-আমার লাইগ্যা কি বউ পাওয়া গেল না।

তোর কত ট্যাহা দরকার-ক? আমার বউ চাই! যত তাড়াতাড়ি পারছ-বিয়ার ব্যবস্থা কর! আমার বিয়ার কথা হুইন্না পোলা মাইয়ার মাথা খারাপ অইয়া গেছে। নজু মুক্তার বলে, হাজী সাব। হেচা কতা কইলে আপনে চেইত্তা যাইবেন। বুড়া মাইনষের কাছে কেডায় মাইয়া দিত চায়।

হাজী সাহেব খুব রাখ হলে বলেন, ঐ নউজ্জ্যা। আমি বুড়া, হে বুইড়া অইয়া গেছি। তাতে কি সমস্যা ক? টেয়া-পইসা, জাগা জমিন যা লাগে আমি দেয়াম। আমার বউ চাই। দেহি কোন ব্যাডায় আমারে থামায়।
পাশের গ্রামের ছলিম মিয়া— মা মরা মেয়ে নিয়ে বিপাকে আছে। বর্তমানের যৌতুকের যে চাহিদা। তাতে বিবাহ দেয়ার মতো তার সর্ঙ্গ্যে নেই। রিকশা চালিয়ে যে কয় টাকা পায়-তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। টাকা পয়সার অভাবে মেয়ের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে দিতে পারছে না। এই সুযোগটাকে নজু মোক্তার কাজে লাগানোর ফন্দি করেছে। তাই ছলিম মিয়াকে বিভিন্নভাবে বুঝায় যে, তার মেয়েকে যদি হাজী সেকান্দর আলীর কাছে বিয়ে দেয়; তার কোনো খরচ লাগবে না। তা ছাড়া হাজী তো কয়েক মাস বা বছর পরেই কবর দেশে চলে যাবে। তখন সয়-সম্পত্তির মালিক তো মিয়া তুমি হবে। তোমার মেয়ের নামে জমি দলিল করে দিবে বলছে।

তাছাড়া হাজীর যে অবস্থা বিয়ে যাবতীয় খরচ পাতির ব্যবস্থা করে দেবে। তোমার এক কানা কড়িও লাগবে না। সময় অসময় টাকা পয়সা নিয়ে চলতে পারবে। নজু মোক্তারের কথা ছলিম মিয়ার মনপোক্ত হয়। তাই সে তার মেয়ের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলে— মা গো। তোরে বিয়া-সাদী দেউনের ব্যবস্থা করার মতো আমার কাছে কোন ট্যাহা পইসা নাই; কি করি মা-তুই ক?

তবে নউজ্জা মুক্তারে কইছে; পাশের গ্যারামের সেয়ান্দার হাজীর নাকি বউ মইরা গেছে। তার লগে তর বিয়া দিত চায়। তুই নাকি এতে বেশি সুখ পাইবি। তুরে জমি লেইখ্যা দিব। মেয়ে উত্তর দেয়-বাবা; মা নাই ঘরে। তোমার ট্যাহা নাই। কি করবা। যা বালা অয় তাই কর। এতে আমারে কওয়ার কি আছে। যা কপাল আছে তা অইব। পায়জামা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে হাজী নতুন বউ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। অবিবাহিত বউ পেয়ে বুড়ো মুচকি মুচকি হাসে আর লাঠি ভর দিয়ে ধীরে ধীরে পা চালাচ্ছে।

কমলাদের বাড়ির পাশ দিয়ে হাজী সাহেবদের বাড়িতে যেতে হয়। ওই দিকে কমলার মা-আওতা বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখতে থাকে লাল শাড়ি পরা নতুন বউকে আর মনে মনে হাসে। এমন একদিন সেও তো লাল শাড়ি পরে এই বাড়িতে এসেছিল। কিন্তু লাল শাড়ির বাঁধন বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি। সেভাবে এই কেমন সমাজ। স্বামীর মারা গেলে স্ত্রী আর কারো সঙ্গে ঘর বাঁধতে পারে না কিন্তু স্ত্রী মারা গেলে স্বামী চল্লিশ দিনও যেতে দেয় না; নতুন করে কারো সঙ্গে ঘর বাঁধতে কালক্ষেপণ করে না। এটাই খোদার দুনিয়া এটাই নিয়ম! এটাই নারীর জীবন!

No comments

Powered by Blogger.