অলৌকিক!

এ এক অলৌকিক ঘটনা। এ জন্যই মানুষ বলে থাকে, রাখে আল্লাহ মারে কে! এ কথাই সত্য প্রমাণ করেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি শিশুকন্যা। তাকে একটি পাত্রে করে দুই ফুট মাটির নিচে জীবন্ত সমাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর কি লীলাখেলা! মাটিচাপা দেয়া সেই শিশুকন্যাটিই আবার পৃথিবীর মুখ দেখছে। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি এলাকার। সেখানে অন্য একটি পরিবারে জন্ম নেয় একটি মৃত কন্যাসন্তান। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য গর্ত খোঁড়া হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই গর্ত খুঁড়তে গিয়ে স্থানীয়রা একটি পাত্র পান মাটির নিচে। কিন্তু তার ভিতর তারা দেখতে পান একটি মানবসন্তান। সঙ্গে সঙ্গে চোখ কপালে ওঠে সবার। তারা ওই পাত্র থেকে উদ্ধার করেন সন্তানটিকে। দেখতে পান সে তখনও শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। কাঁদছে। অন্য কিছু ভাবার আগে তারা দ্রুত তাকে নিয়ে ছুটে যান জেলা সদরের হাসপাতালে। এ সময় শিশুটির অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক।
বর্তমানে ওই হাসপাতালের স্পেশাল নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাকে। উদ্ধার করা এই শিশুটির ওজন মাত্র ১.১ কেজি। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, বাচ্চাটি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রসব করা হয়েছে এবং সে বেঁচে আছে এ জন্য যে, নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেয়া শিশুদের কম অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। এমন হতে পারে যে, তাকে কয়েক ঘন্টা আগে সমাহিত করা হয়েছিল। স্থানীয় বিজেপি দলীয় বিধান সভার সদস্য রাজেশ মিশ্র ওরফে পাপ্পু ভারতোল তার সব চিকিৎসার খরচ বহন করছেন।
এ বিষয়ে সুভাষনগর পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তা হশ্চিন্দ্র যোশী বলেছেন, কে শিশুকন্যাটিকে জীবন্ত মাটিচাপা দিয়েছে তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা করছি আমরা। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে তাকে চিহ্নিত করা হবে। এরপরই মামলা হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় হিতেশ কুমারের স্ত্রী বৈশালী একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসব করেন। পরিবারের সদস্যরা সুভাষনগরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের স্থানে নিয়ে যান তাকে। এক পর্যায়ে একজন শ্রমিক গর্ত খোঁড়া শুরু করেন। তখন তার কোদাল গিয়ে আঘাত করে একটি পাত্রে। এরপর ওই পাত্রটি তুলে তার ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকন্যাটিকে। তখনও সে জীবিত এবং কাঁদছিল। হিতেশ কুমার বলেছেন, ওর কান্না শুনে আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়েই বুঝি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু ওই কান্নার শব্দ আসছিল প্রকৃতপক্ষে ওই পাত্রের ভিতর থেকে। পাত্রটি উন্মুক্ত করে আমরা এর ভিতর একটি শিশুকন্যাকে দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে ডাকা হয় অ্যাম্বুলেন্স। খবর দিই পুলিশে। এভাবেই রক্ষা পায় ওই শিশুটির জীবন।

No comments

Powered by Blogger.