জাকির নায়েকের উসকানিমূলক বক্তব্যের তদন্ত করছে মালয়েশিয়া

বিতর্কিত ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েক মুসলিম-সংখ্যাগুরু মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত হিন্দু ও চীনা অধিবাসীদের নিয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি শান্তি ভঙ্গের উসকানি দিয়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটার তদন্ত শুরু করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

ফেডারেল সিআইডি ডিরেক্টর হুজির মোহাম্মদকে উদ্ধৃত করে দ্য স্ট্রেইট টাইমস বলেছে, তিনি গত বৃহস্পতিবার সেলাঙ্গর পুলিশ সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, “গোম্বাকে একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত ১১৫টি রিপোর্ট দায়ের করা হয়েছে”।

জাকির মালয়েশিয় চীনাদের প্রথমে ‘ফিরে যেতে’ বলেছেন, কারণ তারা দেশের ‘পুরনো অতিথি’। কেলান্তানের কোটা বারুতে‘এক্সিকিউটিভ টক বারসামা ড. জাকির নায়েক’ শীর্ষক এক ধর্মীয় আলোচনায় তিনি তাকে ফেরত পাঠানো বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।

তার বক্তৃতায় মালয়েশিয়ার হিন্দুদের সাথে তিনি ভারতের মুসলিমদের তুলনা করেন, যেটাও বিভিন্ন পক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েছে। তিনি বলেন যে, ভারতে মুসলিমরা যে অধিকার পায়, মালয়েশিয়াতে হিন্দুরা তার চেয়ে শতভাগ বেশি অধিকার ভোগ করে।

নায়েকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা এই মর্মে একটি বিবৃতি দিবেন যে, নায়েক আর মালয়েশিয়ায় অবস্থান করতে পারবেন না।

যোগাযোগ ও মাল্টিমিডিয়া মন্ত্রী গোবিন্দ সিং দেও এবং মানব সম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি যে, এ ব্যাপারে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে এবং জাকির নায়েককে আর মালয়েশিয়ায় থাকতে দেয়া যাবে না”। আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। আমরা এটা তার উপর ছেড়ে দিয়েছি এবং যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধানের জন্য সিদ্ধান্ত নিবেন তিনি”।

নায়েক আগে এমন অভিযোগও করেছিলেন যে, মালয়েশিয়ার হিন্দুরা মাহাথির মোহাম্মদের চেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি বেশি অনুগত।

মালয়েশিয়ার আগের সরকার নায়েককে মালয়েশিয়ার স্থায়ী অধিবাসীর মর্যাদা দেয় এবং গত তিন বছর ধরে তিনি মালয়েশিয়াতে বাস করছেন।

ভারতে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা উসকে দেয়া এবং অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় হোলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার সাথে তার কোন যোগাযোগ আছে কি না, এটা নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত দুজন সন্দেহভাজন দাবি করেছিলেন যে, তারা জাকির নায়েকের মৌলবাদী প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.