দুই শতাধিক চুরির পর অস্ত্রসহ ধরা ‘কিশোর গ্যাং’ by ইব্রাহিম খলিল

দুই শতাধিক চুরির পর অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকার একটি কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ কিশোর। যাদের সবার বয়স ১৭ বছরের কম।
বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আরেকটি চুরির ঘটনা ঘটানোর প্রস্তুতির সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সদরঘাট থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এ সময় কিশোর গ্যাংয়ের আরো ৪-৫ সদস্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দীন।
তিনি বলেন, শুধু কিশোর গ্যাংয়ের বাকি সদস্য নয়: এদের রক্ষকদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পুলিশের হাতে ধরা পড়লে জামিন নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের কেউ ভূমিকা রাখেন। চুরির মালও কম দামে কিনে নেন তারা।
তাদের নাম ও পরিচয় জানিয়েছে কিশোররা। অভিযানের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। অভিযান চলছে। 
গ্রেপ্তারকৃত কিশোররা হলো- দলনেতা মো. বাদশা (১৮), মো. রাসেল (১৯), নুর উদ্দিন (২০), জাকির হোসেন (১৯) ও মো. সোহেল (২০)। তাদের কাছ থেকে একটি দেশীয় বন্দুক, তিনটি কার্তুজ, তিনটি ধারালো অস্ত্র ও তালা ভাঙার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে সদরঘাট থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ওসি নেজাম উদ্দীন।
সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা এক সময় চট্টগ্রাম মহানগরীর কদমতলি রেলস্টেশন এলাকায় কুলির কাজ করতো। সে সময় থেকে তারা মাদকের নেশায় আসক্ত ছিল। তখন নেশার টাকা সংগ্রহের জন্য মোবাইল ফোন ছিনতাই করতো তারা।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের চাহিদা বাড়তে থাকে। ছায়া হিসেবে খুঁজে নেয় রাজনৈতিক নেতাদের। যারা আধিপত্য বিস্তারে এসব কিশোরদের ব্যবহার করে থাকে। এমনকি এসব কিশোরকে দিয়ে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য বিক্রি করে থাকে। এমনকি প্রতি রাতে নগরীর কোথাও না কোথাও চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই করে থাকে।
তাদের দলনেতা মো. বাদশা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তারা দুই শতাধিক চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। বুধবার দিনগত রাতে মাদারবাড়ি এলাকায় আরেকটি চুরির ঘটনা ঘটাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
পরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, বুধবার রাতে কতিপয় চোর মাদারবাড়ি এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটাতে সংঘবদ্ধ হয়। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে সদরঘাট থানা পুলিশ অভিযান চালায়। এতে ৫ জনকে গ্রেপ্তারে  সক্ষম হলেও আরো ৪-৫ জন পালিয়ে যায়। এ সময়  গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি দেশীয় বন্দুক, তিনটি কার্তুজ, তিনটি ধারালো অস্ত্র ও তালা ভাঙার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই কাজে লিপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দিনের বেলায় কৌশলে বিভিন্ন ভবন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যায়। সেখানে টার্গেট করে ফিরে আসে। রাতে ইয়াবা সেবনের পর অস্ত্র নিয়ে চুরি-ডাকাতি করতে বের হয়। ৭ থেকে ১০ জন মিলে চুরির ঘটনা ঘটায়। এদের একজন গ্রিল কাটে, দুজন ভেতরে প্রবেশ করে এবং বাকিরা অস্ত্র নিয়ে পাহারা দেয়। চুরির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আগেও মামলা হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক রুহুল আমিন।

No comments

Powered by Blogger.